ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০২:১৫ অপরাহ্ন
উখিয়ায় মেয়াদউত্তীর্ণ ফ্রুটিকা, কি খাচ্ছে শিশুরা !
এমদাদুল হক ভুট্টো ::

ফ্রুটিকা একটু বেশি-ই পিওর! খেলেই সত্য বলতে হয়!যেহেতু সদা সত্য বলিব, তাই গতকাল থেকে উখিয়া সদরের আনাচে কানাচে এক বোতল ফ্রুটিকা খুঁজে হয়রান, উখিয়া সদরে এখন নামীদামী অনেক ব্রান্ডের বেকারী,বনফুল, মিষ্টিবন,ফুলকলি আরো অনেক ঝিক ঝাঁক মিষ্টান্ন ভাণ্ডার এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয় নামের রেস্তোরাঁ, কিন্তু ফ্রুটিকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা! তবে কি মানুষ সত্য বলার ভয়ে ফ্রুটিকা খায়না! ? রাত বারটায় দোকান বন্ধ করে ফ্রুটিকার খুঁজে রিক্সা নিয়ে ষ্টেশনের দক্ষিণ মাথা গেলাম, দক্ষিন ষ্টেশনে কয়েকটা সুপারশপ আছে,সব জায়গায় খুঁজেও ফ্রুটিকা না পেয়ে মুখভার করে চলে আসার সময় একটা পানের দোকানে দেখলাম অনেকগুলো পাকা কলার চরা, পাকা চাপা কলা দেখে লোভ সামলাতে না পেরে রিকশা থেকে নেমে কলার দাম জানতে চাইলাম, পান দোকানদার দাম বলল জোড়া ১৪ টাকা, দামাদামি হবেনা, বাংলা কলা হলে দাম ডাবল! কারন রমজান মাস! অনেকেই আছেন বাঙলা কলা আর দই,দুধ,ঘি মেখে ভাত না খেলে সেহেরির স্বাদই মিটেনা! দরাদরি না করে চরার একটা কাঁধি দিতে বললাম, ফ্রুটিকার মায়া ছাড়তে না পেরে অবিশ্বাস্য মনে ছোট পানের দোকানদারকেও বললাম ফ্রুটিকা আছে কি-না?

পানের দোকানদার খুব স্বাভাবিক ভাবে বলল ফ্রুটিকার আধা লিটারের দুটো বোতল আছে, আমি তো শুনে অবাক! আজ দুদিন উখিয়ার নামীদামী সব ব্রান্ডশপে ফ্রুটিকা খুঁজে আমি হয়রান হয়ে গেছি,অথচ ছোট একটা পানের দোকানে ফ্রুটিকা! দোকানের স্বচ্ছ আয়নার ফ্রীজে দেখলাম দুই ধরনের মোড়ক লাগানো ফ্রুটিকা দুটো! আমাকে এক বোতল দিতে বলায়, ফ্যাকাসে রঙের মোড়ক লাগানো বোতলটা এগিয়ে দিল, আমি জানতে চাইলাম দুটোর আলাদা মোড়ক কেন, দোকানদার বলল, আপনার হাতে যেটা দিছি সেটা পুরোনো মোড়কের, আর লাল বর্নেরটা নতুন,আপডেট! তবে খেতে পুরোনো টাই সেরা! আমি কোম্পানির নাম আর উপাদান আর মেয়াদ উত্তীর্ণর তারিখ দেখতে গিয়ে দেখলাম, আমার হাতে দেওয়া ফ্রুটিকা কোম্পানির সঠিক পন্য হলেও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এক বছর আগে,আমাকে ভাঙাচোরা মানুষ দেখে! মুর্খ ভেবে মেয়াদ উত্তীর্ণ বোতলটি পরিকল্পিত ভাবে ধরিয়ে দিতে চেয়েছিল, তা নাহলে,খেতে পুরোনোটাই সেরা বলার কি দরকার ছিল? পরে আমি আপত্তি করাতে পুরোনোটা রেখে দিয়ে, নতুন বোতলটাই দিল, কলা আর ফ্রুটিকা নিয়ে চলে আসার সময় পান দোকানদার কে বললাম, এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ পন্য খুব ক্ষতিকারক, বিশেষ করে শিশুদের জন্য! শিশুরা এসবে আকর্ষণ বেশি! খেয়ে কোন কারনে খাদ্য বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হলে মারাও যেতে পারে!তাই কিছু টাকা ক্ষতি হলেও যাতে মেয়াদ উত্তীর্ণ বোতলটি ফেলে দেওয়ার অনুরোধ করলাম,,কিন্ত তার কথায় মেয়াদ উত্তীর্ণ বোতলটি ফেলে দিয়ে সে কখনো লস্ দেওয়ার পাত্র নয়,,তাই বোতলটি আবার ফ্রীজে রেখে দিল!আমাদের অনেক নামি-দামি ওষুধ কোম্পানি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভোগ্যপন্য বিক্রি করা নামি দামী প্রায় সব কোম্পানির পন্যর মোড়কে লাগানো ব্যাচ নং,উৎপাদন, মেয়াদ,পন্যর মুল্য লেখা যে সীলটা ছাপিয়ে দেওয়া থাকে, তথ্যগুলোর লিখা খুবই অস্পষ্ট, এলোমেলো, এই বিষয়ে বিএসটিআইয়ের কোন ধরনের ধারনা আছে কি-না আমার জানা নাই,,অথচ ভোক্তা প্রতারিত হয়ে এসব পন্য ক্রয় করে খেয়ে খাদ্য বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে,এমন কি দেশে মহামারী হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবেনা,এ বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনার দাবী জানাচ্ছি,, আর আমাদের উখিয়ার সেনেটারী ইন্সপেক্টরের বাজারে উপস্থিতি মেঘলা আকাশে ঈদের চাঁদ দেখার মত! উনি উখিয়া বাজার দেখেছেন কি-না যথেষ্ট সন্দেহ আছে!
আমার দুটো ছেলে সন্তান, যথাসম্ভব তাদের কে বাহিরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখি,বড় ছেলেটি ইদানীং স্কুলে যাচ্ছে, ক্লাস ওয়ানের ছাত্র,অন্যর দেখাদেখি ইদানীং তারও ইচ্ছে, সবাই যা খাচ্ছে, আমি কেন খাবনা?মন্দের ভাল হিসেবে ফ্রুটিকাটি তার জন্য কেনা,,
ফ্রুটিকার নতুন মোড়কের বোতলের ছবিটি আমার হাতে তুলেছি,।

 

লিখা ও ছবি এমদাদুল হক ভুট্টোর ফেইসবুক আইডি থেকে নেওয়া 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *