ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
তারেক রহমান লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন : পররাষ্ট্র সচিব
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, লন্ডন থেকে ঢাকাকে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঢাকা-লন্ডন পঞ্চম কৌশলগত সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

সংলাপে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি স্যার ফিলিপ বার্টন।

২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পরের বছর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ২০০৮ সালে তারেক রহমান দেশ ছাড়েন। এরপর থেকে তিনি লন্ডনেই অবস্থান করছেন।

তবে বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে, তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয় বলে জানা গেছে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আইনানুগভাবে দুই দেশের মধ্য বন্দি বিনিময়ের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজকের বৈঠকে আমরা দু’একটা মেকানিজমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এসওপি শিগগিরই সাইন করব, যেন যুক্তরাজ্যে যারা ভিসার বাইরে থাকছে বা অবৈধ হয়ে আছে তাদের নিয়ে আসতে পারি। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি জানান, মাইগ্রেশান অ্যান্ড মবিলিটি নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করতে তারা (যুক্তরাজ্য) সম্মত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের কিছু শিক্ষার্থী এবং কর্মী সেখানে যাচ্ছে সেটাকে আরও যেন বাড়ানো যায়; সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

মানবাধিকারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কথা জানানো হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনে ত্রুটি থাকলে তা উৎরাতে সাহায্য করবে যুক্তরাজ্য।

সংলাপে অংশ নেওয়া যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের এ ধরণের এসওপি আছে, যার সদস্য ব্রিটেনও আছে। কিন্তু ব্রেক্সিট হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আর আমাদের এসওপি হয়নি। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা তাদের সঙ্গে এসওপি চুক্তি করছি। এটি হলে প্রতি মাসে তিন থেকে চারজন অবৈধ বাংলাদেশি দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অসংখ্য মামলার মধ্যে এখন পর্যন্ত চারটিতে তার সাজা হয়েছে। এরমধ্যে অর্থ পাচারের একটি মামলায় ২০১৩ সালে বিচারিক আদালতের রায়ে তিনি খালাস পেলেও পরে উচ্চ আদালত তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়। ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মা খালেদা জিয়ার সাথে তারও সাজা হয়। তারেককে দেওয়া হয় ১০ বছরের কারাদণ্ড। একই বছরের অক্টোবরে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার কয়েকটি ধারায় তারেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সাথে বিস্ফোরক আইনের আরেকটি ধারায় তার ২০ বছর কারাদণ্ডাদেশ হয়।

সবশেষ গত ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। একই মামলায় তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সরকার তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে সাজা কার্যকরের চেষ্টা করছে। তবে দেশটিতে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকায় তা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *