ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০৫:১৬ অপরাহ্ন
এত কোটিপতি প্রার্থী আসে কোথা থেকে: নজরুল ইসলাম খান
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া কোটিপতি প্রার্থীদের টাকার উৎস এবং তাদের উত্থানের পেছনের কারণ জানতে চান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, পত্রিকার খবর বেরিয়েছে যে, যারা এখন নির্বাচন করছে, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রার্থী কোটিপতি। এত কোটিপতি আসে কোত্থেকে বাংলাদেশে?

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। তার ভাষায়, ‘যে কোনো উপায়ে’ নির্বাচন করে এই ‘নিশিরাতের সরকার’ তাদের মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে চাইছে।

এবারের নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৮ জন প্রার্থী শত কোটি টাকার বেশি সম্পদের হিসাব দিয়েছেন তাদের হলফনামায়। প্রার্থীদের ২৭ শতাংশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।

সরকারি দলের লোকজনই দেশের টাকা ‘লুটপাট’ করছে অভিযোগ তুলে নজরুল বলেন, আমরা ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করলাম… আর আজ ২২০০ পরিবার তৈরি হয়ে গেল। একটু আগে শুনেছেন আপনারা, প্রায় ৮ লাখ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয়ে গেছে। কারা এই টাকা লুট করেছে? সরকার কি জানে না, সরকার কি তাদের ধরতে পারে না? কিন্তু ধরে না। কারণ তারা হয় সরকারি দলের, আর সরকারি দলের পক্ষের লোক।

নজরুলের ভাষায়, ক্ষমতাসীনদের ‘লুটপাটে’ বাংলাদেশে আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে।

‘আসলে জিডিপিতে যা দেখানো হয়, সেখানে একটি বড় হিসাব…. এখন একজন কোটিপতি আর আপনার– দুই জনের ইনকাম যদি যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে আপনিও তো ৫০ লাখ টাকার মালিক হয়ে গেলেন। এই অংকে কোনো লাভ নাই। দেশের গরিব মানুষ বাজারে গিয়ে যখন দেখে যে, গরীব মানুষ তার উপার্জিত অর্থ দিয়ে কিছু কিনতে পারছে না… তখন এই অংক তার কাছে কোনো অর্থ বহন করে না। এই অংক তাকে ফাঁকি দেয়ার কৌশল মাত্র।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘অবৈধ ক্ষমতার’ মেয়াদ বাড়াতেই সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচন করছে।

‘নিশিরাতের যে সরকার, জনগণের ভোট চোরের যে সরকার, তারা এই নির্বাচনের নামে তাদের মেয়াদটা বৃদ্ধি করে নেবে আরও পাঁচ বছর। আমরা জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছি, এই নির্বাচনের নামে পাতানো খেলা ‘আমি ডামি’র নির্বাচন প্রতিহত করুন, বর্জন করুন।’

৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনে জনমত গড়তে গণসংযোগে নেমেছে বিএনপি। এই কর্মসূচিতে মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার টানা তিন দিন সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছে দলটি।

এ আন্দোলনকে ‘শান্তিপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করে নজরুল বলেন, আমরা বর্জনের আহ্বান জানিয়েছি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা শুধু বলেছি যে, আপনারা দয়া করে ভোট দিতে যাবেন না। আপনার ভোটে কোনো কিছুর কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।

দ্বাদশ ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমরা এমন একটা দেশের জন্য লড়াই করেছিলাম যেখানে আমরা যাকে নির্বাচিত করব, জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, তারা দেশ পরিচালনা করবে। কিন্তু ২০১৪, ২০১৮ সালে সেই সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। আরেকবার আমাদের বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চলছে।

জনগণের উদ্দেশে নজরুল বলেন, আপনি যদি ডাকাতি ঠেকাতে না পারেন, অন্তত ডাকাতের সাথে যুক্ত হবেন না, ডাকাতিতে সহযোগিতা করবেন না। এই হল আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে ‘ডামি নির্বাচন বর্জন, অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে’ চিকিৎসকদের এই মানববন্ধন হয়।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল কবির লাবু, ওবায়দুল কবির খান, শহিদ হাসান, মোস্তাক রহিম স্বপন, সিরাজুল ইসলাম, পারভেজ রেজা কানন, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার বক্তব্য দেন। পরে চিকিৎসকদের নিয়ে নজরুল ইসলাম খান পথচারীদের কাছে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করেন।

এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান দুপুরে মহিলা দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। এই সময়ে বিএনপির তাহসিনা রুশদির লুনা, শিরিন সুলতানা, রেহানা আক্তার রানু, নিলুফার চৌধুরী মনি, সৈয়দ আসিফা আশরাফি পাপিয়া, নেওয়াজ হালিমা আরলিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অপর্ণা রায়, ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা তোপখানা রোড ও পল্টন মোড়ে লিফলেট বিতরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *