ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বানচাল করতে পরিকল্পিত অভিযান: মির্জা ফখরুল
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঢুকে পুলিশ অভিযান পরিচালনাকে বর্বরোচিত পৈশাচিক, নারকীয় ও সংবিধান বিরোধী বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্যে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে। কোনো সভ্য দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এইভাবে হামলা করা, ভাংচুর করা, ভিতরে প্রবেশ করে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করার ঘটনা আওয়ামী লীগের আমলেই সম্ভব। এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রকে ধবংস করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামীল। এটা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। এর থেকে খারাপ কাজ কিছু হতে পারে না।’ আজ বুধবার রাতে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে বসে থাকা অবস্থায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়েছে। তারা সবচেয়ে হীন কাজটা করেছে যে, তারা নিজেরা এখানে ব্যাগে করে কিছু কিছু বিস্ম্ফোরক নিয়ে রাখে। সংবাদকর্মীদের কাছে তার ভিডিও রয়েছে। অভিযান পরিচালনার আগে পুলিশ কার্যালয়ে ঢুকে সাদা ব্যাগে সেটা রেখে আসে। এখন তারা বিএনপির ওপর সেটা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আজকে যেভাবে বিএনপির কার্যালয় রেইড হলো সেটা ২০১৩/২০১৪ সালের মতোই ঘটনা। ওই সময়ে যেসব পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযানে ছিলেন আজকেও তাদেরকে দেখা গেছে। সেই অংশটিই ছিল। পরিকল্পিতভাবে তাদেরকে আগে আনা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব আবেগপ্রবণ হয়ে বলেন, ‘এই ভয়াবহ নির্যাতন, অসহায় গণতান্ত্রকামী মানুষগুলোকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটার জন্য একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম?’ এ সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোকে এভাবে ধইরেন না। এটা ঠিক নয়। দিস ইজ টু মাচ। আমার উপস্থিতিতে আপনারা একরম ঠিক করছেন না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের মন্ত্রীরা আগে থেকেই উসকানিমূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিস্কার করে বলেন, খেলা হবে। আরেকজন মন্ত্রী বলেন যে, হেফাজতের মতো সাফ করে দেওয়া হবে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৩/১৪/১৫ সালের মতো নীলনকশা করছে জনগণের ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে আবারো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দমন করে দিতে চায়।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এই অভিযান শুধু বিএনপিকে ক্ষতি করে নাই, সমস্ত বাংলাদেশে মানুষের বুকে আঘাত হেনেছে। একইসঙ্গে তারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে সেই ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধবংস করতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। আজকে দেখেছি যে, কারা কারা এই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, কোন কোন বাহিনী এখানে এসছে। কিভাবে পাশবিকভাব নারকীয় তাণ্ডব তারা চালিয়েছে তা বর্ণনা করা যায় না। সেই ভাষা আমার নেই। এটা আমি একমাত্র মনে করতে পারি একাত্তর সালে হানাদার বাহিনী যেভাবে মানুষের অত্যাচার করেছিলো সেই অত্যাচারের নমুনা আমরা দেখেছি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অফিসে সমস্ত কম্পিউটার, যতরকম ডকুমেন্ট সব তারা নিয়ে গেছে। সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুতের লাইট ভেঙে দিয়েছে যাতে করে কোনো এভিডেন্স না থাকে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *