ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
১৫ ছাগলের এক বছরের ‘কারাবাস’, মুক্তি পেল ৯টি
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

গোরস্থানে ঢুকে গাছের পাতা খাওয়ার অভিযোগে এক বছর আগে ১৫টি ছাগল আটক করেছিল বরিশাল সিটি করপোরেশন। নতুন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের নির্দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার নয়টি ছাগল ফেরত দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু ছাগলের মালিক নগরের ২১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহরিয়ার সাচিব রাজিব দাবি করছেন, এক বছরে ৫টি ছাগল বাচ্চা প্রসব করায় মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ টি। অথচ গতকাল বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশন তাঁর কাছে হস্তান্তর করেছে মাত্র ৯টি। সাবেক মেয়র সাদিকের মেয়াদকালীন ২৪টি ছাগলের হিসাব চেয়ে তিনি সিটি করপোরেশনে লিখিত অভিযোগ দেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল নগরের মুসলিম গোরস্থানে ঢুকে গাছের পাতা খাওয়ার অভিযোগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর স্থানীয় শাহরিয়ার সাচিব রাজিবের ১৫টি ছাগল আটক করে সিটি করপোরেশন। রাজিব ২১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী বলে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, এই কারণেই তৎকালীন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তাঁর স্টাফদের দিয়ে ছাগলগুলো আটক করান।

ওই ঘটনায় রাজিবের পরিবার সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ছাগল ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু মেয়র সাদিকের দায়িত্বকালীন ছাগলগুলো ফেরত না দিয়ে করপোরেশনের আমনতগঞ্জের গাড়ির গ্যারেজে আটকে রাখা হয়।

ছাগলের মালিক শাহরিয়ার রাজিব বলেন, তাঁর ১৫টি ছাগল গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ধরে নিয়ে গ্যারেজে অরক্ষিত অবস্থায় আটকে রাখে। এর মধ্যে ১১টি বড় এবং ৪টি ছোট ছাগল ছিল। সেগুলোর ৫টি ছাগলের পেটে বাচ্চা ছিল। পরদিন ৭ ডিসেম্বর একটি ছাগল ২টি বাচ্চা প্রসব করে। কিন্তু দুটি বাচ্চাই মারা যায়। পরবর্তীতে ৩টি ছাগল ২টি করে ৬টি এবং অপর একটি ছাগল একটি বাচ্চা প্রসব করে। সে হিসাবে, তাঁর মোট ২৪টি ছাগল সিটি করপোরেশনের জিম্মায় ছিল।

রাজিব আক্ষেপ করে বলেন, তাঁর মূল ১৫টি ছাগলও তিনি ফেরত পাননি। গতকাল বৃহস্পতিবার ৯টি ছাগল বুঝিয়ে পেয়ে বাকিগুলোর হিসাবে জানতে চেয়েছেন। সেখানে উপস্থিত করপোরেশনের বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাঁকে বলেছেন, ২৪টি ছাগল দাবি করলে মেয়রের কাছে লিখিত দরখাস্ত করতে হবে। আগামী রোববার তিনি বর্তমান মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি গতকাল ৯টি ছাগল পেয়ে মালিকের কাছে হস্তান্তর করেছেন। ছাগল কয়টা ছিল তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে প্রশাসনিক শাখায় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরাই বলতে পারবেন বাকি ছাগলগুলো গেল কোথায়।’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বরিশাল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল আলম বলেন, ‘কোনো পশু আটক করা হলে সাত দিনের মধ্যে মালিককে নোটিশ দিতে হবে। দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখার বিধান নেই।’

তিনি সিটি করপোরেশনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এটি তাঁর জানা আছে। করপোরেশন কোনো প্রাণী এক বছর আটকে রাখতে পারে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *