ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে বিজিপি সদস্যরা
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ডেকুবুনিয়া ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও দেশটির বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির ব্যাপক যুদ্ধ চলছে। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে থেমে থেমে গুলি ও বোমাবর্ষণ অব্যাহত ছিল।

এই যুদ্ধের বেশ কয়েকটি গুলি ও মর্টারশেল বাংলাদেশের ভূখণ্ড তুমব্রু কোনারপাড়া, মাঝেরপাড়া ও বাজারপাড়ায় এলাকায় পড়েছে। ফলে আতংকে ঘর ছেড়েছে এই তিন গ্রামের মানুষ।

এ ছাড়া মিয়ানমারের দিক থেকে আসা গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত দুজন। আহতরা হলেন- প্রবীন্দ্র ধর (৫০) ও রহিমা বেগম (৪০)। আহতদের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ সময় কোনারপাড়ার কয়েকটি ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বিদ্রোহী গ্রুপের ব্যাপক গোলাবর্ষণে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৩ জনেরও বেশি সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্ত পথে আরও ৩০ জনেরও বেশি বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে ঢোকার জন্য অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তবে এ ব্যাপারে তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৩টার পর থেকেই ব্যাপক গুলিবর্ষণের পাশাপাশি, মর্টারশেল নিক্ষেপ ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করছে। এতে সীমান্তের বাজার-ঘাট বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্পের চতুর্পাশে আরাকান আর্মি ঘিরে রেখেছে এবং তারা বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট দখলে নিয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বিজিপির কিছু সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তে স্কুলগুলো আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদ জানান, তিন গ্রামের হাজারো মানুষ গত রাত থেকে বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ওই অবস্থায় রেখে ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। মালামাল নেওয়ারও সুযোগ হয়নি তাদের।

এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, সীমান্তে যাতে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে প্রশাসন থেকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সীমান্তে নজর রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *