ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০৪:২৩ অপরাহ্ন
নাক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ইটভাটা মালিকরা কাউকেই মানছেন না !
সরওয়ার আলম শাহীন ::

নাক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অবৈধ ইটভাটা মালিকরা স্থানীয় প্রশাসন বলেন বা পরিবেশ অধিদপ্তর বলেন কাউকেই তোয়াক্কা করছেননা। তারা যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন করে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট ছাড়াই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানছে না ইট পোড়ানোর সঠিক বিধিমালা। ইটভাটা মালিকদের দাবি ‘ম্যানেজ’ করেই তারা ভাটায় কাজ করছেন।

ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন ২০১৩-এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ব্যবহার করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া নাক্ষ্যংছড়ির প্রায় ১৫টি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়াচ্ছে। ভাটার আশপাশে কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। ইটভাটাগুলো হলো ঘুমধুম ইউনিয়নের ASB’ ইটভাটা, BHB’ ইটভাটা, AFD, ইটভাটা, মিলন মিস্ত্রির HSB ইটভাটা, সাজু বড়ুয়ার DSB ইটভাটা,HKB ইটভাটা, ফরিদ কোম্পানির BBM ইটভাটা, আবুল কালাম মেম্বারের KRS ইটভাটা, খালেদ সরওয়ার হারেজ KRE ইটভাটা, বাবুর HAZI সহ আরও একাধিক ইটভাটা রয়েছে।

এদিকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, ইটভাটার মাটি সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই এ উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মৌসুমে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকরা। সাথে মাটির জন্য কাটছে বন বিভাগের পাহাড়।

বেশ কয়েকজন ইটভাটা মালিক বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, কয়লার সংকট তাই সবগুলো ভাটাতেই কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব মালিকের আছে। সরকার দুই বছরের মধ্যে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো ভাটাগুলো বন্ধ করে দিবে। তাই কারও কাগজপত্র নবায়ন নাই।
কাগজপত্র নবায়ন না থাকায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে আসছি। ম্যানেজ না হলে অবৈধ ভাটা এক দিনও চলতে পারবে না। হাইকোর্টের নির্দেশের পর সম্প্রতি মাত্র চারটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালিত হয়, চারটি ইটভাটাই চার লাখ টাকা জরিমানা করা হলেও অবৈধ ভাটা ভাঙা হয়নি।

এ বিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন বলেন, আমরা খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো। অবৈধভাবে ইটভাটা চালানোর কোনো সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *