ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
দৈনিক ৫০ হাজার টাকা দিয়ে চলছে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ইটভাটাগুলো!
নিজস্ব প্রতিবেদক ::

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের অবৈধ ইটভাটা মালিকরা সীমান্তের ভাটা গুলো চালিয়ে নিতে সবগুলো ইটভাটা থেকে সমন্বয় করে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে প্রশাসনকে। একাধিক সূত্র এমনটাই জানিয়েছে। সূত্র গুলো বলছে, প্রায় সময় নিউজ হওয়ার কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হন ভাটা মালিকরা। পাশাপাশি বন্ধ রাখতে হয় ওইদিনের৷ ভাটার যাবতীয় কার্যক্রম। এ থেকে বাঁচতে ভাটা মালিকরা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় প্রশাসনের সাথে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে যায় বলে জানা যায়। ফলে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট ছাড়াই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানছে না ইট পোড়ানোর সঠিক বিধিমালা। ইটভাটা মালিকদের দাবি ‘ম্যানেজ’ করেই তারা ভাটায় কাজ করছেন।

সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া নাইক্ষ্যংছড়ির প্রায় ১৫টি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়াচ্ছে। ভাটার আশপাশে কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। ইটভাটাগুলো হলো ঘুমধুম ইউনিয়নের ASB’ ইটভাটা, BHB’ ইটভাটা, AFD, ইটভাটা, মিলন মিস্ত্রির HSB ইটভাটা, সাজু বড়ুয়ার DSB ইটভাটা,HKB ইটভাটা, ফরিদ কোম্পানির BBM ইটভাটা, আবুল কালাম মেম্বারের KRS ইটভাটা, খালেদ সরওয়ার হারেজ KRE ইটভাটা, বাবুর HAZI সহ আরও একাধিক ইটভাটা রয়েছে।

এদিকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, ইটভাটার মাটি সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই এ উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মৌসুমে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকরা। সাথে মাটির জন্য কাটছে বন বিভাগের পাহাড়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুইজন ইটভাটা মালিক প্রশাসনের সাথে চুক্তির কথা স্বীকার করে বলেন, এছাড়া উপায় ছিল না। সাংবাদিকদের লেখালেখির কারণে ইটভাটাগুলো ঠিকমত চালানো যাচ্ছিল না, কখন অভিযান পরিচালনা হয়,তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তাই সব ইটভাটা মিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে দৈনিক ৫০ হাজার টাকা করে প্রশাসনকে দেওয়ার। তাই এখন আর মনে ভয় নিয়ে ইটভাটা চালাতে হচ্ছে না। অভিযান নিয়েও কোন টেনশন করতে হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন বলেন, কার সাথে কি চুক্তি হয়েছে তা আমাদের জানার কথা নয়। আমরা খুব শিগগিরই এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো। অবৈধভাবে ইটভাটা চালানোর কোনো সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *