ঢাকা, সোমবার ২২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া
ডেস্ক রিপোর্ট ::

সবুজ কুমার বর্মণ প্রবাল। পেশায় একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। কর্মরত রয়েছেন রাজধানীর একটি বায়িং হাউজে। থেরাপির পরিবর্তে সাধারণ মানুষকে হাঁটার উপকারিতা বোঝাতে তিনি দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে চলেছেন। তবে অফিসের কারণে তিনি একটানা হাঁটতে পারছেন না। ৫ দিন অফিস করে বাকি দুই দিন হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পাড়ি দিতে বর্তমানে নীলফামারীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন।

জানা যায়, পহেলা জানুয়ারি থেকে টেকনাফের জিরো পয়েন্ট থেকে হাঁটা শুরু করেন। নীলফামারী পর্যন্ত পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে ১৫ দিন। তবে শনিবার ভোর থেকে ওই যুবকের হাঁটায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দিনাজপুরে যুক্ত হন চাচাতো ভাই অনিব কুমার বর্মণ ও দিনাজপুরের কেবিএম কলেজের বিএসএস চূড়ান্ত র্বষের শিক্ষার্থী রেখা সরকার।

তারাও প্রথম দিনে ৬০ কিলোমিটার পথ হেঁটে নীলফামারীতে পৌঁছান। রাতে নীলফামারীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান শেষে রোববার ভোরে নীলফামারীর চৌরঙ্গী মোড় থেকে এক দিনেই তেঁতুলিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

প্রবাল বলেন, গত বছর আমি করোনা পজিটিভ হয়েছিলাম এবং আমার ফুসফুস ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখান থেকে আমি বেঁচে ফিরি। সে সময় আমি পরিকল্পনা করেছিলাম, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত হেঁটে যাব এবং দেশের মানুষকে ‘সে ইয়েস ফর ওয়ার্ক, সে নো ফর থেরাপি’ মেসেজ দেব। সেই চিন্তা থেকেই বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে ১ জানুয়ারি থেকে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করি।

প্রবাল আরও বলেন, একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত থাকায় আমার পক্ষে একবারে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। যে কারণে সপ্তাহে ৫ দিন অফিস করে শনি ও রোববার হেঁটে ১৫ দিনে ৮৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নীলফামারী পৌঁছাই। ২১ ফেব্রুয়ারি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। এদিন সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটারের বেশি হেঁটে রেকর্ড করার ইচ্ছা আছে।

প্রবাল বলেন, আমার আগে ইচ্ছে ছিল পাহাড়ে উঠার। ইতোমধ্যে সাকাহাফং, তাজিংডং, যোগী হাফং, জুগি যতলং পাহাড়সহ দেশের বেশ কয়েকটি পাহাড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের দেশের আরও কিছু উঁচু পাহাড় আছে সেগুলোর পাশাপাশি ভারত, নেপালের বিভিন্ন পাহাড়সহ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার ইচ্ছে আছে। এজন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে।

রেখা সরকার  বলেন, ছোটবেলা থেকেই ঘুরতে, পাহাড় ও ঝরনা দেখতে খুব ভালো লাগে। আর প্রবাল দাদার সঙ্গে পাহাড় দেখতে গিয়েই পরিচয় হয়েছে। সেখানেই দাদার টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা শুনি। প্রথম থেকে আমার ইচ্ছে ছিল তার সঙ্গে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাব। কিন্তু নানা কারণে সম্ভব হয়নি। আজ সুযোগ হওয়ায় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে ৬০ কিলোমিটার হেঁটে নীলফামারী পর্যন্ত আসছি। আমাদের ইচ্ছে এক দিন এক রাত হেঁটে তেঁতুলিয়া গিয়ে আরেকটা রের্কড করব।

অনিব কুমার বর্মণ বলেন, আমার ভাইয়া টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যাওয়ার একটা মিশন হাতে নিয়েছে। এটা দেখে আমারও আগ্রহ বেড়ে যাই। তার সঙ্গে ৬০ কিলোমিটার হাঁটতে সক্ষম হয়েছি। আরও এক দিন প্রায় ১১০ কিলোমিটার হাঁটার পরিকল্পনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *