১৪ ও ১২ বছর বয়সী সহোদর দুই শিশু মোহাম্মদ মাসউদ নুরী ও হাসান মাহমুদ ত্বাকি একসাথে হেফজ সমাপ্ত করে রীতিমত তোলপাড় সৃস্টি করেছে। সহোদর দুই ভাইয়ের অসাধারণ এই কৃতিত্বে দ্বীপ জুড়ে চলছে আলোচনা। বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০ মার্চ অনুষ্টিত সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় রাতে হাফেজ হওয়ার স্বীকৃতি স্বরুপ আনুষ্টানিকভাবে দস্তারবন্দি (পাগড়ী প্রদান) করার পর। প্রকাশ্য সভায় আনুষ্টানিক ঘোষণার মাধ্যমে পাগড়ী প্রদান করেন টেকনাফ আল—জামিয়া আল—ইসলামিয়াসহ একাধিক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টানের মহাপরিচালক বহু গ্রন্থ প্রণেতা, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত আরবী সাহিত্যিক ও দৈনিক সাগর দেশ পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ¦ আল্লামা মুপ্তী কিফায়তুল্লাহ শফীক্ব।
জানা যায়, মাত্র আড়াই বছরে পুরো কোরআন মুখস্থ করেছে ‘হাফেজ’ খেতাব অর্জন করেছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঐতিবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্টান ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মাদ্রাসায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর নয় জন শিশু শিক্ষার্থী পবিত্র কোরাআন মুখস্ত করে হাফেজ হয়েছেন। এদের মধ্যে বয়স ও সময়ের তুলনায় সর্বকনিষ্ঠ। উক্ত দুই সহোদর অন্যতম। শিশুদ্বয় সেন্টমার্টিনদ্বীপের বাসিন্দা অনলাইন নিউজ পোর্টাল টেকনাফ নিউজ ডট কম’ এর সেন্টমার্টিনদ্বীপ প্রতিনিধি সাংবাদিক মাওলানা নুর মোহাম্মদ ও আজিজা খানমের পুত্র।
অল্প সময়ে কোরআন মুখস্থ করা প্রসঙ্গে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক এমএ তাহের শাহীন বলেন, ‘আড়াই বছর আগে বন্ধুবর মাওলানা নুর মোহাম্মদ এর ২ শিশু আমাদের মাদরাসায় ভর্তি হয়। হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ রফিক এর তত্ত্বাবধানে মাত্র আড়াই বছরেই পবিত্র কোরাআন মুখস্ত সম্পন্ন করে’।
ক্ষুদে হাফেজদ্বয়ের গর্বিত পিতা মাওলানা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল ২ ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানানোর। মহান আল্লাহু তা’য়ালা আমার সেই আশা পূরণ করেছেন। পরিবারের ইচ্ছা তারা যেন বড় আলেম হয়’।
মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘ছেলে দুইটির স্বভাব চরিত্র খুব ভালো এবং নম্র ভদ্র। মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি এদেরকে দ্বীনের খাদেম হিসেবে যেন কবুল করেন’।
মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘১৪ ও ১২ বছর বয়সী সহোদর দুই শিশু মোহাম্মদ মাসউদ নুরী ও হাসান মাহমুদ ত্বাকি একসাথে হেফজ সমাপ্ত করেছে। পৃথিবীতে যত ধর্ম গ্রন্থ আছে তন্মধ্যে কেবল পবিত্র কোরআন শরীফই মুখস্থ করা হয়। তাই পৃথিবীতে অসংখ্য অগণিত কোরআনের হাফেজ বিদ্যমান। আরও আশ্চয্যের বিষয় হলো কোরআন হেফজ করার সময়। কেউ এই মহাগ্রন্থ এত অল্প সময়ে মুখস্থ করে ফেলে যে, তার রীতিমতো বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। পবিত্র কোরআন শুধু আল্লাহতায়ালার প্রেরিত একটি গ্রন্থ নয়, বরং এটা একটা বড় নির্দশনও বটে। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিম নাজিল করার সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ করারও দায়িত্ব নিয়েছেন নিজে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমকে বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করছেন এবং কেয়ামত অবধি তা সংরক্ষণ করবেন। কোরআন সংরক্ষণের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে মানুষের মাধ্যমে কোরআন মুখস্থ করা। যাকে আমরা হিফজ বলি। আমাদের প্রত্যাশা আল্লাহতায়ালা তাদেরকে দ্বীনের জন্য কবুল করবেন’।
Leave a Reply