ঢাকা, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন
সাকিব খানের সঙ্গে ‘কথা না বলায়’ মা-মেয়েকে মারধর!
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

বরগুনার আমতলীতে সাকিব খান নামে এক মাদকসেবী যুবকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় মা-মেয়েকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাবা আব্দুস ছালাম মৃধা ও সাকিব খানের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের আব্দুস ছালাম মৃধা প্রতিবেশী বিধবা শাহিনুর নামের এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ওই অবৈধ সম্পর্ক পাকাপোক্ত করতে বিধবা নারীর ছেলে মাদকসেবী সাকিব খানের সঙ্গে তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন বাবা ছালাম। তবে এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি মেয়ে।

ভুক্তভোগী মেয়ের অভিযোগ- বাবা ছালাম মৃধার সহযোগিতায় মাদকসেবী সাকিব খান তাকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করে আসছে। বুধবার রাতে বাবা ছালাম মৃধা ওই সাকিব খাঁনকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। পরে মেয়েকে ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেন। কিন্তু বাবার এ আদেশ মানকে রাজি হয়নি মেয়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা ছালাম মৃধা ও সাকিব খাঁন তাকে মারধর শুরু করে। মেয়েকে রক্ষায় মা এগিয়ে গেলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে।

পরে তাদের ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ওই মেয়ের নানা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার আব্দুস ছালাম ও বখাটে সাকিব খান ও বিধবা নারী শাহিনুর বেগমের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওইদিন রাত ১২টার দিকে তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাবা আব্দুস ছালাম ও সাকিব খান পালিয়ে যায়।

ওই মেয়ে বলেন, মাদকসেবী সাকিব খান আমাকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করে আসছে। আমি এ ঘটনা বাবাকে জানালে বাবা উল্টো আমাকে ওই ছেলের কথা শুনতে নির্দেশ করেন। বুধবার রাতে বাবা ওই ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন এবং আমাকে ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেয়। আমি বাবার কথায় রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও মাকে মারধর করেছে।

ওই মেয়ের মা কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী ছালাম মৃধা প্রতিবেশী বিধবা শাহিনুর নামের এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত। তার পরকীয়া পাকাপোক্ত করতে আমার মেয়েকে বিধবা নারীর ছেলে সাকিব খানের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় এবং মেয়েকে ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ করে। মেয়ে বাবার নির্দেশ না মানায় আমার স্বামী ছালাম মৃধা এবং সাকিব খাঁন মিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, একজন বাবা হয়ে মেয়ের এমন সর্বনাশ করতে পারে? আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

বাবা আব্দুস ছালাম মৃধা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কথা না মানায় মেয়েকে লাঠি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেছি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তাওহিদুল ইসলাম বলেন, মা ও মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *