ঢাকা, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকের ব্যবসা যেকোন মূল্যে বন্ধ করা হবে
ডেস্ক রিপোর্ট ::
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‌‌’ক্যাম্পগুলোতে মাদকের ব্যবসা যেকোন মূল্যে বন্ধ করা হবে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যেমন মাদকের কারবার চলে, তেমনি বাইরেও চলে। এসব কর্মকান্ডে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যে ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১ টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটি’র গুরুত্বপূর্ণ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ”রোহিঙ্গারা এখন মাদক পাচার ও ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে মাঝে মাঝে উত্তপ্ত হয় ক্যাম্পগুলো। রক্তপাতের এসব খেলা বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব অপরাধ ঠেকাতে র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি বিজিবিও সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। এছাড়া এপিবিএনের তিনটি ব্যাটালিয়ন এখন সব ক্যাম্পের পুর্ণ দায়িত্বে রয়েছে। তারা ২৪ ঘন্টাই সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রেখেছে।
ভারত থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আর নয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে সম্প্রতি বেশকিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে। নতুন করে কোন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের সে দেশেই ফেরত পাঠানো হবে। একই সঙ্গে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গারা যাতে বাহিরে আসতে না পারে সেদিকেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বাইরে চলে যাচ্ছে। ক্যাম্পগুলোর চারদিকে সীমানা প্রাচীর করা হয়েছে। যাতে কোন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখার বিষয়টিও আজকের বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
উখিয়া-টেকনাফের চেয়ে ভাসানচরে অনেক উন্নত ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের যেভাবে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় দিয়েছে তার চেয়ে উন্নত ব্যবস্থা ভাসানচরে করেছেন। প্রতিবছর রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছে। সে হিসেবে এখনি স্ব ইচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে চলে যাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন বলেন মন্ত্রী।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন, পুলিশের মহা পরিদর্শক ড. বেনজির আহমদ, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, কক্সবাজার ত্রাণ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজোয়ান হায়াত, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এসময় ১৭ তম এ সভায় ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা ও ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ, ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তর কার্যক্রম, স্বাস্থ্য ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, এনজিওদের কার্যক্রম ও তৎপরতা ও বিবিধ নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে জানিয়েছেন সভায় উপস্থিত কয়েকজন কর্মকর্তা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টারদিকে ২ দিনের সফরে কক্সবাজার আসেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসএমপি। রাঙ্গামাটি থকে হেলিকপ্টার যোগে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রেজাউল করিম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট তাপস রক্ষিত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ শুক্রবার ২৭ মে সকাল সাড়ে ১০ টায় বিজিবি কক্সবাজার রিজিওন এর বাৎসরিক মাদকদ্রব্য (মালিকবিহীন) ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *