ঢাকা, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
রোহিঙ্গারা খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, অস্ত্র ও মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়েছে
ডেস্ক রিপোর্ট ::

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এখন অপরাধের অভয়ারণ্যে । আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, অস্ত্র ও মাদক পাচার, ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। গত চার বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ১২ ধরনের অপরাধে ১ হাজার ২৯৮টি মামলা হয়েছে। এতে আসামি হয়েছে ২ হাজার ৮৫০ রোহিঙ্গা। ক্যাম্পগুলোর ভেতরে ১৫ থেকে ২০টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে চলছে মাদক ব্যবসাসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড। অভিযোগ উঠেছে, এখানে প্রতিদিন প্রায় শতকোটি টাকার ইয়াবার লেনদেন হয়। শুধু তাই নয়, দেশের সব ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নাকি এসব ক্যাম্প থেকেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার পর ক্যাম্পকেন্দ্রিক অপরাধ নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও কর্মীদের দাবি, অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরেই অন্তত ১৫ থেকে ২০টি সক্রিয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে। এর বাইরে ক্যাম্পকেন্দ্রিক রয়েছে আরও একাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রত্যেক বাহিনীতে ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত সদস্য রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাম্পগুলো হয়ে ওঠে অপরাধের অভয়ারণ্য। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি ও খুনাখুনিতে জড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পগুলোতে দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকলেও রাতে তা অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদ্য কারামুক্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক কয়েকজন শীর্ষ মাদক কারবারি বলেন, ক্যাম্পে প্রতিদিন শতকোটি টাকার বেশি ইয়াবার লেনদেন হয়ে থাকে। অন্তত ৩০ থেকে ৪০ লাখ ইয়াবা প্রতিদিন হাতবদল হচ্ছে। তারা আরও বলেন, মূলত ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে-বাইরে অন্তত অর্ধশতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে।

উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক কারবার, স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে ১২ থেকে ১৪টি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে বলে শুনতে পেয়েছি। তাদের দ্রুত নিশ্চিহ্ন করতে না পারলে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের পরিণতিও ভয়াবহ হতে পারে।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, রোহিঙ্গা নেতা নিহতের পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ওপর নজরদারি। প্রতিনিয়ত ক্যাম্পে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *