ঢাকা, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
মিয়ানমারে ফিরতে ‘গো হোম’ মহাসমাবেশ করবে রোহিঙ্গারা
সমকাল ::

দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য নানা দাবি নিয়ে আগামীকাল রোববার মহাসমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। ‘গো হোম ক্যাম্পেইন’ নামে এই সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, আগামী ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে ১৯ জুন (রোববার) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একসঙ্গে পৃথক পৃথক স্থানে এই সমাবেশের আয়োজন করবে রোহিঙ্গারা। সমাবেশে তারা মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার, দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরবে।

গো হোম ক্যাম্পেইনের ব্যানারের একটি ভার্চুয়াল কপি পাওয়া গেছে। তাতে আয়োজক হিসেবে নির্দিষ্ট কোনো সংগঠনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। আয়োজক হিসেবে লেখা হয়েছে ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী’।

 

এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ক্যাম্পে প্রথমবারের মতো বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল মাস্টার মুহিবুল্লাহর নেতৃত্বে। পরে তিনি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। কিন্তু এবারের সমাবেশে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই বিষয়টি এখনো গোপন রাখছে রোহিঙ্গারা।

তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পে এবারও সমাবেশ আয়োজনে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সাথে নিয়ে নেতৃত্বে দিচ্ছে প্রয়াত রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মুহিবুল্লাহর হাতে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস।

রোহিঙ্গাদের দাবিগুলোর একটি লিফলেট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই লিফলেটে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস সংগঠনের লোগো রয়েছে। ওই লিফলেটে ১৮টি দাবি উল্লেখ করেছে রোহিঙ্গারা।

২০১৯ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের যে সমাবেশ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা উঠেছিল, তার উদ্যোক্তা ছিলেন মুহিবুল্লাহ। ছবি- সংগৃহীত। 

জানা গেছে, রোববার পাঁচটি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা একসাথে বালুখালী রোহিঙ্গা

ক্যাম্প-৯ এর ফুটবল মাঠে সমবেত হবে। সকাল ১০টায় শুরু হবে সমাবেশ। সেখানে একসঙ্গে যোগ দেবে ক্যাম্প-৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ নাম্বারে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। তবে বাকি ক্যাম্পগুলোর রোহিঙ্গারা ওই সমাবেশে যোগ দেবে নাকি পৃথক পৃথক স্থানে সমাবেশ করবে সেই বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সমাবেশে উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা দাবিগুলো হলো, রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকতে হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন হতে হবে, সীমিত সময় রাখা যাবে মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে, প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করতে হবে, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া বার্মার ১৯৮২ সালের  নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ ইত্যাদি দাবি উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

এদিকের রোহিঙ্গাদের সমাবেশের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা সেটি জানতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে। খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

এবিষয়ে ৮-এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসেন জানান, মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা ‘গো হোম ক্যাম্পেইন’ সমাবেশ করতে আরআরআরসি কার্যালয় থেকে অনুমতি চেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা হবে। তারা কীভাবে ক্যাম্পেইন করতে চায়, তা জেনে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে অনুমতি প্রদান করা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *