ঢাকা, শনিবার ২০ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
পুলিশের তালিকায় শীর্ষ মাদক কারবারি হলেন আ.লীগের সভাপতি
ডেস্ক রিপোর্ট ::

পাঁচ বছর আগে যশোরের শীর্ষ ১৪ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল জেলা পুলিশ। সেই তালিকায় চার নম্বরে ছিলেন চৌগাছা উপজেলার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মন্ডলের ছেলে শফি মেম্বার ওরফে শফিকুল ইসলাম। তিনি গত ২৮ মে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি মনোনীত হয়েছেন।

পুরস্কার ঘোষিত ‘শীর্ষ মাদক কারবারি’কে আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত করায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।

চৌগাছা থানা পুলিশের ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ জানিয়েছেন, শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বারের বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি বেশ কিছু মামলায় ওয়ারেন্টও জারি হয়েছিল।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ মে যশোর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ১৪ শীর্ষ মাদক কারবারিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন। ওই তালিকার ৪ নম্বরে ছিলেন চৌগাছার বড় কাবিলপুর গ্রামের সোনাই মন্ডলের ছেলে শফি মেম্বার ওরফে শফিকুল ইসলাম।তখন মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলে শফি মেম্বার বিদেশে চলে যান। সম্প্রতি দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।

গত ২৮ মে যশোরের চৌগাছার ধুলিয়ানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম শফি মেম্বারকে সভাপতি ও মাস্টার ফারুক হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে আট সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানান, শীর্ষ মাদক কারবারি শফিকুল ইসলাম ওরফে শফি মেম্বার পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি দেশে এসে শীর্ষ নেতাদের ম্যানেজ করে দলীয় পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে শফি মেম্বার বলেন, মামলা থাকলে দলীয় পদে আসতে পারবে না, এমন কথা কোথাও লেখা নেই। দল যদি মনে করে পদে রাখবে না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা হয়েছে, প্রত্যেকটিই ষড়যন্ত্রমূলক। এসব মামলার ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ইতোমধ্যে দুটিতে খালাস পেয়েছি। বর্তমানে ১৬টি মামলা আছে। আমি বিদেশে অবস্থানকালেও তিনটি মামলায় আসামি হয়েছি। আমি কখনো মাদকসহ আটক হইনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও পুলিশের লোকের সঙ্গে বিরোধ থাকায় আমাকে একের পর এক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ৫ বছর মেম্বার ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছি। তখন অনেকের কাছে শত্রু হয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে সোমবার বিকেলে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে কল করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি বিকেল ৩টার দিকে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘জীবন বৃত্তান্তে তথ্য গোপন করায় ধুলিয়ানি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ঘোষিত সভাপতি পদ স্থগিত করা হলো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *