কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত তিনজনকে ধরতে অভিযান চলছে। ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘সামান্য ধাক্কাধাক্কির কারণে তারা আমার এত বড় ক্ষতি করল! বারবার হাতে-পায়ে ধরলেও তারা আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। বেড়াতে এসেছিলাম বেতন পাওয়ার খুশিতে। এখন স্ত্রীর অবস্থা ভালো না। তাকে নিয়ে চিন্তায় আছি। ’ কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, যারাই জড়িত থাকুক তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে।যেভাবে ঘটনাটি ঘটে : ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে বুধবার সকালে শিশুসন্তান নিয়ে কক্সবাজার পৌঁছান এ দম্পতি। সন্ধ্যায় সমুদ্রসৈকত লাবণী পয়েন্টে ভিড়ের মধ্যে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তদের সঙ্গে ধাক্কা লাগে স্বামীর। দুর্বৃত্তদের কাছে ক্ষমাও চান তারা। কিন্তু কৌশলে পর্যটক স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া বাধায় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করে স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামী ও সন্তানকে আলাদা করে ফেলে চক্রটি। স্ত্রীকে চাকুর ভয় দেখিয়ে অটোরিকশায় করে নিয়ে যায় ঝাউবনের নির্জন স্থানের একটি ঝুপড়িতে। তারপর তিনজন মিলে ধর্ষণ করে গৃহবধূকে। এরপর তাকে তারা নিয়ে যায় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। দ্বিতীয় দফায় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আবারও পালাক্রমে ধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। ধর্ষণ করার পর সেখান থেকে ধর্ষণকারীরা হোটেল ত্যাগ করে। এ ঘটনা কাউকে জানালে স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করা হবে জানিয়ে কক্ষের বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায় তারা। পরে জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন ওই নারী। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ। ধর্ষণের শিকার নারীর অভিযোগ, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তার নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি আমি তাকে বলি। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। এতে আমার মনোবল হারিয়ে গিয়েছিল। ’
তিনি বলেন, ‘যখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম একপর্যায়ে আমার চোখ হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ডের দিকে যায়। সেখান থেকে র্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে জরুরি সেবার জন্য ফোন দিলে তৎক্ষণাৎ সাড়া দেওয়ার কথা ছিল, সেটি আমি কেন পেলাম না!’ কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াসের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি দেখছি। গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জরুরি সেবা ৯৯৯-এ সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম মাঠে থাকে। আমরা সব সময় কল পেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সহযোগিতা করি। তবে এ ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় লিখিত এজাহার পাওয়া গেলে মামলা রুজু করা হবে। ’ কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। জড়িত আরও দুজনকে আটকের চেষ্টা চলছে। ’
Leave a Reply