ঢাকা, শনিবার ২০ জুলাই ২০২৪, ১২:১৬ অপরাহ্ন
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ইটভাটায় পাহাড়, জমির মাটি : কর্তৃপক্ষ আছে কি?
সরওয়ার আলম শাহীন :

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বন ও পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন অবৈধভাবে ফসলি জমি ও পাহাড় কেটে ইটভাটার জন্য মাটি নেওয়া হলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা। ইটভাটাগুলোর কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে শত শত একর ফসলি জমি ও সবুজ পাহাড়।

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক,ডাম্বার দিয়ে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার কাজ দিনে সীমিত হলেও রাতে চলে বেপরোয়া গতিতে।

নাইক্ষ্যংছড়ি কচুবনিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসান জানান , বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষ বলে থাকে-অভিযান পরিচালনা করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, লোকদেখানো কিছু অভিযান পরিচালনা করা হলেও অবৈধ ইটভাটা রয়ে যায় বহাল তবিয়তে। আবার কখনো কখনো কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতও দেখিয়ে থাকে। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে অবৈধ ইটভাটার অস্তিত্ব দেখে বোঝার উপায় নেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয় কি না। এক্ষেত্রে আদৌ কোনো কর্তৃপক্ষ আছে কি না। কেননা আবাসিক এলাকার ইটভাটার বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও ফল পাননি এলাকাবাসী।
এখানে আবাদি জমিতে, এমনকি তিন ফসলি জমিতেও ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব কি দেখার কেউ নেই? ইটভাটার কারণে অবিরত নির্গত কালোধোঁয়ার সঙ্গে ছাই ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকাগুলোয়; আশপাশের সবকিছুই ধুলাবালিতে আচ্ছন্ন থাকে। ইটভাটার কারণে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ বাড়ছে; বন উজাড় হচ্ছে। পাহাড় কাটার ফলেও ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি। তাছাড়া আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি যেভাবে অপসারণ করা হচ্ছে, একসময় তা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ইটভাটার নির্গত কালোধোঁয়ায় পরিবেশের যে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে এর প্রভাবে ফসল ও ফলনে মারাত্মক প্রভাব পড়বে এবং মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হবে।
তার মতেকাজেই লোকদেখানো অভিযান নয়, অবৈধ ইটভাটাসহ পরিবেশের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী যে কোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। কর্তৃপক্ষ যে আছে, তার অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি, ঘুমধুমের চাইল্যাতলী সাগর, আজু খাইয়ায় শহিদুল আলম, আবুল কালাম মেম্বার ও রেজু আমতলীর ছৈয়দ হোসেন, খুনিয়াপালংয়ের আলমগীর, রেজু পাত্রাঝিরির হায়দার আলী ও হলদিয়া পাতাবাড়ী, ইউপি সদস্য ফজল করিম, পাতাবাড়ী খেওয়াছড়ি বাদশাহ মেম্বার, মধ্যম হলদিয়া আব্দুস ছবুর কোম্পানি মালিকানাধীন কয়েকটি ইট ভাটা ঘুরে দেখা যায়, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির ১৫ টি ইট ভাটার প্রতিটির সামনে-পেছনে বিপুল পরিমাণ পাহাড়ের মাটি স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *