ঢাকা, মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন
জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পেল ডামুড্যার ৪ কিশোর
ডেস্ক রিপোর্ট ::

শিশু-কিশোরদের নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করতে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন ইতালি প্রবাসী এক যুবক। আর সেই ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে টানা ৪৫ দিন জামাতে নামাজ পড়ে পুরস্কার জিতে নিয়েছে শরীয়তপুরের ডামুড্যার চার কিশোর।

সমাজসেবক ও ইতালি প্রবাসী মো. ফারুক বেপারি নামে এক যুবকের উদ্যোগে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম কুতুবপুর জামে মসজিদে বুধবার এ সাইকেল দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক দিন আগে মো. ফারুক বেপারি মসজিদে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ১৫ বছরের কম বয়সের কিশোররা যদি একটানা ৪৫ দিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করে, তা হলে তাদের একটি করে বাইসাইকেল পুরস্কার দেওয়া হবে।

টানা ৪৫ দিন নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়েছে, এমন চারজনের হাতে বুধবার সেই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, শিশু-কিশোরদের নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে মসজিদমুখী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এমন উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তরুণ সমাজসেবক প্রবাসী মো. ফারুক বেপারির এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

বিষয়টি সম্পর্কে পশ্চিম কুতুবপুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি মো. খবির উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ঘোষণার পর থেকে অনেক কিশোর মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা শুরু করে। তারা ঠিকমতো নামাজ আদায় করছে কিনা তা হিসার রাখার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর হাজিরা নেওয়া হতো। যদি কেউ কোনো ওয়াক্তে অনুপস্থিত থাকত তখন তার গণনা বন্ধ করে দেওয়া হতো। তবে সে চাইলে তার নাম আবার লিখিয়ে নতুন করে নামাজের দিন গণনা শুরু করতে পারত। এভাবে নিয়মিত যাচাই-বাছাই ও হাজিরার ভিত্তিতে সর্বশেষ চারজন বিজয়ী হয়।

তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা চলাকালীন তাদের শুধু নামাজই পড়ানো হয়নি। বরং সঠিকভাবে নামাজ শিক্ষা ও নামাজ সম্পর্কে জরুরি মাসায়ালাও শেখানো হয়, সেই সঙ্গে তালিম-তরবিয়ত এবং নামাজের প্রতি মানুষকে আহ্বানের পাশাপাশি দ্বীনি ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ গ্রহণে কীভাবে উদ্ধুদ্ধ হলেন, জানতে চাইলে মো. ফারুক বেপারি জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমি প্রায়ই দেখি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে কিশোরদের মসজিদমুখী করতে এমন উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। সে থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি।

এ যুবক আরও বলেন, বেশ কয়েক দিন আগে পত্রিকায় দেখি, ভারতেও এমন একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আমি সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হই এবং একদিন জুমাপূর্ব বয়ানে বিষয়টি উত্থাপন করি। আলহামদুলিল্লাহ উপস্থিত মুসল্লিরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, পরে ১৫ বছরের কম বয়সি কিশোরদের মধ্যে একটানা ৪৫ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের মসজিদের তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায় করার প্রতিযোগিতা ঘোষণা করি। ঘোষণার পর থেকে এলাকার অনেক কিশোর মসজিদে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করে।

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সদস্য ও যুবনেতা মো. ফারুক আলম বলেন, এমন কার্যক্রমে এলাকার শিশু-কিশোররা নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে এবং এ প্রতিযোগিতায় আমার শিশুসন্তান ফাহিম ইসলাম নাফিসও ৪৫ দিন জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে সাইকেল বিজয়ী হয়েছে।। বিজয়ীদের মাঝে সাইকেল পুরস্কার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন মসজিদের খতিব মুফতি মো. খবির উদ্দিন, সমাজসেবক মোহাম্মদ মাদবর, আব্দুল হাই বেপারি, নুরুল ইসলাম বাবুল বেপারি, ফারুক মাদবর, রুহুল আমিন বেপারি, দেলোয়ার সরদার, রসিদ শেখ, আব্দুল আলী বেপারি প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *