ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। ৩ টি পদে ১১ প্রার্থী নির্বাচন করছেন, এরইমধ্যে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা এবং ভোটারের কৌশলে কেউ কারো চেয়ে কম নয়। একেবারে শেষ মুহূর্তে উভয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত বাক যুদ্ধে নির্বাচনী মাঠে
উত্তেজনায় ভোটাররা শ্যাম রাখি না কুল রাখি এ
অবস্থায় পড়েছে।
জানা গেছে, এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের একজন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী৷ তিনি আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন৷ অপরজন হলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আবুল মনসুর চৌধুরী (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন৷ ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারনার মধ্যে আনারস মার্কার প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী এগিয়ে থাকলেও ২ জনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
কারণ হিসেবে দেখছেন আরেক প্রার্থী ঘৌড়া প্রতীকের
জাফর আলম চৌধুরী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর চাচা
তিনি ২৭ মে সংবাদ সম্মেলন মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সর্বস্তরে নেতাকর্মীরা মরিয়া হয়ে তার পক্ষে ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছেন ফলে জয়ের পথে অনেকটা সুবিধাজনক স্থানে আনারস মার্কার প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী।
অপরদিকে নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি দলীয় উপজেলার শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ কৌশলী ভূমিকায় আন্ডারগ্রাউন্ডে চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে কাজ করছেন মোটর সাইকেল মার্কার প্রার্থী আবুল মনসুর চৌধুরীর পক্ষে । এতে বিএনপি সমর্থিত বিশাল ভোট ব্যাংক কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে
করে শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচনী হিসাব নিকাশ অনেকটা মোড় নিতে শুরু করেছে।
বিগত ৫ দিন পূর্বেও নির্বাচনী মাঠ ছিল অনেকটা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর দখলে। বিশাল বিশাল শোডাউন,মহিলা সমাবেশ,গণসংযোগ পথসভার সভার মাধ্যমে তার বিজয়ের পথ অনকটা নিশ্চিত ছিল বলে সকলের মুখে মুখে রব উঠেছিল।কিন্তুপ্রচার-প্রচারণার শেষ দিন ২৭ মে মোটর সাইকেল মার্কার আবুল মনসুর চৌধুরীর সমর্থনে ৩টি ইউনিয়নের জনবহুল কোটবাজার স্টেশনে বিশাল শোডাউন করে পথসভা জনসভায় রূপ নেয়।বিএনপি সমর্থিত ভোটাররা এটির মাধ্যমে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী কে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।
রাত পেরুলেই নির্বাচন ৷ তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী তালা মার্কা , সাংবাদিক গফুর চৌধুরী চশমা মার্কা , গফুর উল্লাহ বই মার্কা , কামাল উদ্দিন মিন্টু মাইক মার্কা প্রতীক নিয়ে এবং উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম টিউবওয়েল মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন৷ শেষ মুহূর্তে এসে তারা নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্ধারিত এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
সাধারণ ভোটারদের দাবি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে আছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও গফুর চৌধুরী। তবে ভোটারদের মতে মূল লড়াই হবে ত্রিমুখী গফুর চৌধুরী, রাশেল চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর আলম এর মধ্যে। এই ৩ জনের মধ্যে যে কোন একজন বিজয়ের হাসি হাসবেন বলে এমনটি ধারণা করছেন ভোটের সমীকরণ বিশ্লেষণকারী বিভিন্ন মহল।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ভোটারদের ধারে ধারে যাচ্ছেন, বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নেসা বেবী কলসী মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন৷ বাকী দু’জন হচ্ছেন, সানজিদা আক্তার নূরী প্রজাপতি মার্কা ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনা আক্তার হাঁস মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন৷ প্রচারণায় ও নির্বাচনের বিভিন্ন কলা কৌশল এবং মেরুকরনে কমরুনেসা বেবি এগিয়ে রয়েছেন
বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ । তবে কামরুনেচ্ছা বেবি ও শাহীন আক্তারের মধ্যে লড়াই হবে ক্ষেত্র বিশেষে সমান তালে আবার অনেক ক্ষেত্রে বেবির পাল্লা দ্বিগুণ ভারী বটে।
তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, আগামী ২৯ মে উখিয়া উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩১২ জন। এর মধ্যে ৭৭ হাজার ৪৭ জন পুরুষ এবং মহিলা ভোটার ৭২ হাজার ২৬৫ জন। উপজেলা প্রথম বারের মতো ভোটাররা ইভিএমে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রয়োগ করবেন৷
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply