ঢাকা, শনিবার ২০ জুলাই ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
কোটি টাকার সম্পত্তির জন্য বাবার মরদেহ ফেলে রাখলো সন্তান, মানুষের চাঁদায় দাফন
ডেস্ক রিপোর্ট ::

রাজধানীর বাড্ডা এলাকার সাবেক ব্যাংকার ফিরোজ ভূঁইয়ার রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। আর তার মৃত্যুর পর সম্পত্তি ভাগের জন্য বাবার লাশ দাফন না করে একদিনেরও বেশি ফেলে রেখেছিল সন্তান। অবশেষে মানুষের চাঁদার টাকায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে গ্রামের বাড়ি নরিসিংদীতে।

বাড়ির ভেতর যখন সম্পত্তি ভাগের আয়োজন চলছে তখন ফিরোজ ভূঁইয়ার নিথর দেহ তারই বানানো বাড়ির নিচে একদিন ধরে পড়ে ছিল অযত্ন আর অবহেলায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মৃত ফিরোজ ভূঁইয়ার ছোট ছেলে আবির সম্পত্তির জন্য বাবার দাফন করতে দিচ্ছিলেন না কাউকে। মা ও বড় ভাইয়ের অনেক অনুনয়ও মন গলাতে পারেনি আবিরের।

প্রায় বছর দশেক আগে অবসরে যান সোনালী ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ফিরোজ ভূঁইয়া। তারপর থেকেই ঢাকার পাঁচতলা বাড়ি ও নরসিংদীর সম্পত্তি লিখে দিতে নানাভাবে তাকে নির্যাতন করতো ছোট ছেলে আবির। গেলো কয়েক বছরে বাসার ভেতরের একটি কক্ষে অনেকটা বন্দি করে রাখা হয়েছিল সাবেক এই ব্যাংক কর্মকর্তাকে, এমনকি দেয়া হতো না চিকিৎসাও।

যমুনা নিউজকে প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, মৃত ফিরোজ ভূঁইয়ার ছোট সন্তান আবির মা-বাবার সম্পত্তি লিখে নেয়ার জন্য মরদেহ আটকে রাখেন। দাফন-কাফন করতে পারছিল না পরিবার। জীবদ্দশায়ও খাওয়ার সময় ছাড়া তাকে রুমে আটকে রাখতেন আবির। অযত্ন-অবহেলায় ছিলেন ফিরোজ ভূঁইয়া। চিকিৎসা সেবাও পেতেন না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যাওয়ার পর লাশ বাড়ির নিচেই ফেলে রাখা হয়। পরে স্থানীয়দের চাপে ও তাদের সহযোগিতায় শনিবার রাতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নরসিংদীর গ্রামের বাড়ি। সেখানেই রোববার সকালে দাফন হয় তার।

ফিরোজ ভূঁইয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, ছোট ছেলেকে সম্পত্তি লিখে দিতে তার শ্বশুর তাদের ওপর চাপ তৈরি করেছিল। অবহেলার মাঝেই মৃত্যু হয় তার স্বামীর।

ফিরোজ ভূঁইয়ার বড় ছেলে তানভীর আহমেদ ভূঁইয়ার দাবি, তার বাবা-মায়ের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতো আবির। সম্পত্তির জন্য সবসময় বাজে আচরণ করতো।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সেলিম বলেন, মৃতের সব সম্পত্তি জোর করে দখল করতেই তার লাশকে জিম্মি করে রেখেছিল ছোট ছেলে আবির।

বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আলম মাসুদ সিদ্দিকী জানান, আপাতত বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে, তবে কেউ অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ নিয়ে অভিযুক্ত ছেলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাসায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বেশ কয়েকবার চেষ্টারও পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *