ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজারে ঝুলন্ত তারের জঞ্জাল, সড়কে বাড়ছে ঝুঁকি
ডেস্ক রিপোর্ট ::

কক্সবাজার শহরের কলাতলী সড়কে দাঁড়ালেই মাথার ওপর নুয়ে পড়ে ঝুলন্ত তার। শহরের প্রধান সড়কগুলো ছেয়ে গেছে বিপজ্জনক তারে। ফুটপাত ও রাস্তা ঘেঁষে বিদ্যুতের খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টে ঝুলে আছে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইটের তার। এসব তার গোটা শহরের সৌন্দর্য যেমন ম্লান করে দিয়েছে, তেমনি বাড়ছে ঝুঁকিও।

শুধু কলাতলী এলাকাই নয়, পুরো শহরই তারের জঞ্জালে আটকে আছে। বিশেষ করে কলাতলী, সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবলী পয়েন্ট, বাজার ঘাটা, বিলকিস মার্কেট, কালোর দোকান, টার্মিনাল, হলিডে মোড়, বার্মিজ মার্কেট, হসপিটাল রোড এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় এ রকম চিত্র দেখা গেছে। কেউই মানছে না কোনো নীতিমালা।

সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতা ও যথাযথ আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার কারণে তারের জঞ্জাল দিন দিন বাড়ছে। এ কারণে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটছে মাঝেমধ্যে।

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তারের জঞ্জালে সড়কের দামি বৈদ্যুতিক ও সড়কবাতির খুঁটির ক্ষতি হচ্ছে। ঝুলতে ঝুলতে অনেক স্থানে তারগুলো মাটি পর্যন্ত স্পর্শ করছে। এসব তারের জঞ্জালে একদিকে নগরীর সৌন্দর্যহানি হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন সময় ঘটছে অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা। ঝুলে থাকা ডিশ বা ইন্টারনেটের ক্যাবল থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। পুরোনো তারে ত্রুটি দেখা দিলে সেগুলো না কেটেই নতুন তার লাগিয়ে নেয় সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে তারের জঞ্জাল দিন দিন বেড়েই চলেছে।

শহরের বাসিন্দারা বলছেন, শহরকে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে নগরে বিদ্যুৎলাইন এবং ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের লাইন মাটির নিচে নেওয়ার কাজটি করতে হবে। এতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি সিস্টেম লস কমিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের উপকার করবে। ঝড়-বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ-সংযোগ ব্যাহত হবে না। একই সঙ্গে মহানগরীর সৌন্দর্যহানিও হবে না।

কলাতলীর এলাকার অটোরিকশাচালক আজমল হুসাইন বলেন, পর্যটক শহর কক্সবাজার। আমাদের পর্যটক ও সমুদ্রের জন্য সবাই প্রশংসা করে। এতে আমরা গর্বিত। কিন্তু যখন দেখি পরিচ্ছন্ন শহরের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে তারের জঞ্জালের কারণে, তখন এটি আমাদের খারাপ লাগে। তারের জঞ্জাল ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তারের জঞ্জালমুক্ত শহর গড়তে এখনই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্যসচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে পাঁচ-ছয় দিন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারের। কিন্তু কোথায় কাজ দৃশ্যমান হয় না। একদিকে সড়কের বেহাল, অন্যদিকে বিদ্যুৎতের তারগুলো এলোমেলো। একটি খুঁটিতে একাধিক প্রতিষ্ঠানের কেবল ঝুলছে। কোনটা কিসের তাও বলা মুশকিল। একটা সিন্ডিকেট এসব সুবিধা নিলেও ঝুঁকিতে আছে পথচারীরা।

জানতে চাইলে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরদের তারের জঞ্জাল সরাতে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারের জঞ্জাল তারা সরাচ্ছে না। বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটি ও ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে অতিরিক্ত তার পেঁচিয়ে রাখছে ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট ক্যাবল অপারেটরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এগুলো অপসারণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *