মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ব্যাপক গুলি, বোমা, মর্টার শেলসহ ভারী অস্ত্রের আক্রমণ চলছে। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে এপারের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের গোপনীয় সহকারী (সিএ) সৈয়দ হোছাইন মামুন বলেন, ‘দুপুরে অফিসে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ করে পরপর দুটি বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে যাই। পরে বুঝতে পারি মিয়ানমারের চলমান সংঘর্ষের গোলার শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। সকাল থেকেই থেমে থেমে এ ধরনের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।’
সকাল থেকে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের চলমান যুদ্ধে এপারে অনেক ভারী গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। প্রতিদিন এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ এখানকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’
নয়াপাড়া সীমান্তের আব্দুর গফুর জানান, ওপার থেকে আসা বোমার ভয়ঙ্কর কয়েকটি শব্দ শুনেছি। এছাড়া গুলির শব্দে রীতিমতো অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুস সালাম বলেন, সোমবার সীমান্তের লোকজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। নাফ নদের সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন,’সকাল থেকে সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিনের তুলনার আজকের গোলার শব্দ বিকট।’
এদিকে মিয়ানমার মংডু ও বুথেডংয়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনে সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সংঘাতের জের ধরে যাতে রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য নাফ নদে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’
Leave a Reply