আশ্রিত ক্যাম্প থেকে ১২তম দফায় স্বেচ্ছাগামী আরও ২ হাজার ৯৫৭ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের উখিয়া ছেড়েছেন।
বুধবার (৯ মার্চ) দুপুর ও সন্ধ্যায় জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে পুলিশি পাহারায় তারা কক্সবাজার ছাড়েন।
দুপুর দেড়টায় প্রথম পর্বে ২৬টি বাসে উখিয়া কলেজের মাঠ থেকে ভাসানচরের জন্য রওনা হন ১ হাজার ৪৩৭ রোহিঙ্গা । সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে দ্বিতীয় ধাপে ৩০ বাসে আরও ১ হাজার ৫৩৮ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে উখিয়া ছাড়েন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ স্কট ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িও তাদের সঙ্গে যায়।
এর আগে স্বেচ্ছাগামী রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার মাধ্যমে উখিয়া কলেজ মাঠে আসেন। অনেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এবং অনেকে বুধবার আসেন ট্রানজিট পয়েন্টে।
১১তম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৬৫৪ জন রোহিঙ্গা এবং এর আগে ৩০ জানুয়ারি ১০ম দফায় ১২৮৮ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে যান বলে জানিয়েছেন ১৪-এপিবিএন কমান্ডার (এসপি) নাইমুল হক নাইম।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. সামছুদ্দৌজা নয়ন জাগো নিউজকে বলেন, ১২তম দফায় প্রথম-দ্বিতীয় ধাপে ২ হাজার ৯৭৫ রোহিঙ্গা উখিয়া ছেড়েছেন। আগের নিয়মে তারা বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর জেটিঘাট এলাকায় অবস্থান করবেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের ভাসানচর পৌঁছার কথা রয়েছে।
এদিকে, গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ দফায় ২০ হাজার রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে পাঠায়। এছাড়া ২০২০ সালের মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
২০১৭ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গাদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। এরই মধ্যে ২৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
Leave a Reply