“মুজিব বর্ষে” গৃহহীনে গৃহদান নিঃসন্দেহে একটি অতি প্রশংসনীয় উদ্দ্যোগ। কবি বলেছেন, “গৃহহীনে গৃহ দিলে, আমি থাকি ঘরে” কবির ঐ কথার আলোকে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, মানবতার জননী, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাথা গুজাবার ঠাঁই করে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্তের একটি উজ্জ্বল অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন বলে মনে আমি করি।
কিন্তু নিশ্চয়ই তিনি, মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণের বাস্তবতায় প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট করে, প্রাকৃতিক পেরেকখ্যাত পাহাড়, বনভুমি, গাছ গাছালী নিধন ও বিলীন করে মুজিব বর্ষের ঘর বানানোর নির্দেশনা প্রদান করেন নি!
#মুজিব_বর্ষ’র ঘর নির্মাণের অজুহাতে উখিয়ার পালংখালীতে কাটা হচ্ছে ‘পৃথিবীর প্রাকৃতিক পেরেক’ খ্যাত সরকারি পাহাড়, নিধন করা হচ্ছে সবুজ অরণ্য, বন-বনানী, প্রাকৃতিক অনন্য নিদর্শন বাস্তুসংস্থান ও ইকোসিস্টেমের উপাদানসমুহ, সাথে বিলীন হতে চলছে জীব-বৈচিত্র্য, বাস্তুসংস্থান। পত্রিকায় প্রকাশ, গত তিন বছরে কক্সবাজারের মোট বনভুমির ২৪.৩৩% হ্রাস পেয়েছে, যেখানে ১০% রোহিঙ্গাদের কারনে, ১৪.৩৩% হোস্ট কমিউনিটির কারনে। এরুপ বাস্তবতায় নিশ্চয়ই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক পাহাড় ও বনভুমি ধ্বংস করে মুজিব বর্ষের গৃহ নির্মানের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সাধারনের মত আমারও মনে হয়নি!
বনভুমির জায়গায় গৃহ নির্মান পাহাড় নিধন না করে ঐ পাহাড়ের চতুর্পাশে পাদদেশে গৃহ নির্মান করা যেত। এটার বাস্তব উদাহরন, রামুর নিজের পাড়া এলাকায় দৃষ্টি নন্দন মুজিববর্ষের নির্মিত গৃহগুলো যা প্রাকৃতিক পরিবেশকে ভারসাম্য রেখে অতি চমৎকার করে তৈরি করা হয়েছে ( যা নিম্নে ছবিতে শোভা পাচ্ছে)। একই আদলে উখিয়ার পালংখালীতেও পাহাড় বিলীন না করেও মুজিব বর্ষ’র গৃহনির্মান করা যেতো। কিন্তু কাদের ইশারায়, কাদের ইন্ধনে প্রাকৃতিক পাহাড় ধ্বংস ও বিলীন করে উক্ত গৃহ নির্মান করা হচ্ছে তা বোধগম্য নহে। এমনিতেই বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারনে, বাংলাদেশের ১০% উপকুলীয় ভুমি অচিরেই সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যাবার সম্ভাবনার কথা আবহাওয়াবিদ, ভূতত্ববিদ ও বিজ্ঞানীরা বিভিন্নভাবে প্রকাশ করেছেন। এরিমধ্যে পাহাড়, বনভুমি, গাছগাছালি কেটে, উজাড় করে সে সম্ভাবনাকে ফুয়েল জোগানোর কর্মযজ্ঞ পরিবেশ, প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবে।
আমাদের প্রশ্ন-কার ঈশারায়, কার নির্দেশেই চলছে এসব বনভুমি উজাড় ও প্রাকৃতিক পেরেক পাহাড় নিধন কর্মযজ্ঞ❓
পরিবেশ কর্মকর্তা, পরিবেশবাদী, বনভুমি রক্ষাকারী বিভাগ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ভুমিকা এখানে সবচেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ।
এ নিধনযজ্ঞে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
সুত্র-আইকন নিউজ
Leave a Reply