ঢাকা, সোমবার ২২ জুলাই ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন
উখিয়ায় রোহিঙ্গা টোকাইয়ের কোটি টাকার বাড়ি !
নিজস্ব প্রতিবেদক ::

পিতৃ-মাতৃ পরিচয় বিহীন সামান্য ভাংগারি স্ক্রাব টোকাই ছিল তারেক। বার্মাইয়া তারেক বলে আখ্যায়িত করে এলাকার সবাই। বর্তমানে খাস জায়গা দখল করে কুতুপালং বাজারে নির্মাণ করছে বহুতল ভবন।

উখিয়া কুতুপালং বাজারের উত্তরপাশে শাহাজাহান মার্কেটের সাথে লাগোয়া সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রোহিঙ্গা তারেক গড়ে তুলছে বহুতল ভবন।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিজের খতিয়ানী জায়গার পরিচয় দিয়ে রাতারাতি এসব স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলমান রেখেছে।

অভিযোগ উঠেছে, তারেক সু-কৌশলে ২০১২ সালে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন করেছেন। সেখানে তার যে পিতা-মাতার নাম ব্যবহার করেছেন তাদের ভাষ্যমতে সে তাদের সন্তান নই বলে দাবি করেছেন। সে জন্মনিবন্ধনে তার বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে তার বিবাহ এবং ছেলে সন্তানের সাথে মিলালে তার বয়স পড়ে যায় সর্বনিম্ন ২৫ বছর।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তারেক হচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে মায়ানমারের নাগরিক। সে কুতুপালং এলাকায় বসবাস করেন এবং সেখানে ভাংগারি স্ক্রাব ব্যবসার আঁড়ালে চোরাইপন্যের মালামাল পাচার করেন।
এ অনুসন্ধানে আরো উঠে এসেছে, তার জন্মনিবন্ধনের ঠিকানা অনুযায়ী পিতা-মাতার যে নাম ব্যবহার করেছেন পিতা মো: আনজু মিয়া এবং মাতা রেনোয়ারা বেগম তারা দুজন দুই প্রান্তের মানুষ। তার পিতার আইডি কার্ড অনুযায়ী ঠিকানা উখিয়ার হলদিয়াপালংয়ের রুমখা বড়বিল এলাকায়। আনজু মিয়ার স্ত্রী গোলতাজ বেগম এই আইড়ি কার্ড ইস্যু হয় ২০০৮ সালে। সে অনুযায়ী আনজু মিয়া তারেকের পিতা নই।
অন্যদিকে, মাতা সাজানো রেনোয়ারা বেগম তার আইড়ি কার্ড অনুযায়ী ঠিকানা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম কচুবনিয়া এলাকায়। তার স্বামী সাহাব উদ্দিন। এই আইড়ি কার্ড ইস্যু হয় ২০০৮ইং সালে। এ হিসাবে তারেকের জন্মনিবন্ধনে উল্লেখ করা পিতা মাতার নাম সঠিক নই।
এইখানে পরিষ্কার হয় যে, তারেক প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গা। ভুয়া পিতা মাতার আশ্রয় নিয়ে ২০১২ সালে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন করে বাংলাদেশী বনে যায়।

বর্তমানে সে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের জন্মনিবন্ধন শো করে কুতুপালং এলাকা থেকে বিবাহ সম্পন্ন করেন। বিবাহের পরে তার শশুরের খতিয়ানী জায়গা বলে সরকারী খাস জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করে চলছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, তারেক ভাংগারি স্ক্রাব ব্যবসা করে কিন্তু এত বড় দালান করার মতো তার কোন আয়ের উৎস নেই এবং সরকারি খাস জায়গা দখল করার এত দুঃসাহস ও তার নেই। তার পিছনে কোন রাঘববোয়ালের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানায়, তারেক ভাংগারি ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন যাবত মায়ানমার থেকে চোরাইমালের ব্যবসা করে। এমন কি সীমান্তের অনেক বড় বড় চোরাইমাল ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের সাথে তার আঁতাত রয়েছে। সে বর্তমানে বাংলাদেশী এন আইডি করার জন্য ২ লক্ষ টাকা বাজেট করেছেন এক দালালের মাধ্যমে।

এ বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত তারেক মুঠোফোনে জানায়, তার পিতা আনজু মিয়া কিন্তু সে জন্মের আগে তার মাকে ডিভোর্স দিয়ে দিছে। যার কারণে এসব গন্ডোগোল রয়েছে। খাস জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয়টি জানতে চাইলে জানান, এটি খতিয়ানী জায়গা।

উখিয়া সহকারী কমিশনার ভুমি সালেহ আহমেদকে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *