ঢাকা, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
অনলাইনে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে ভাবছে ইসি
ডেস্ক রিপোর্ট ::

প্রবীণ ও অসামর্থ্যবানদের জন্য দেশে ভোটের ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে তারা যাতে ঘরেই বসেই নিজের ভোটটি দিতে পারে, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এজন্য দুটো বিষয় নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। একটি হচ্ছে পোস্টাল ব্যালট, অন্যটি হচ্ছে ই-ভোটিং সিস্টেম বা অনলাইনে ভোটদান পদ্ধতি।

জানা গেছে, বর্তমানে ভোটের কাজে নিয়োজিত সরকারি বা সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবী, ইসি কর্মকর্তারা এবং প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে অর্থাৎ ডাকযোগে ভোট দিতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে এদের সঙ্গে প্রবীণ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এই সুযোগটি আনতে চাচ্ছে কমিশন। এজন্য সংশোধন আনা হচ্ছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেও (আরপিও)।

পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের সুযোগটি রাখা হয়েছে আরপিও-এর ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে। এতে বলা হয়েছে- কোনো ব্যক্তি তিনি যে ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়ার অধিকারী সে কেন্দ্র ছাড়া অন্য কোনো ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত থাকলে এবং বাংলাদেশি ভোটার হিসেবে বিদেশে অবস্থান করলে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আবেদনের ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের কাছে ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালট পাঠান। রিটার্নিং কর্মকর্তা অগ্রিম ডাক মাশুল পরিশোধ না করে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন স্থানে পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে প্রেরণ করতে পারেন এবং ভোটাররাও যাতে ওই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে তার নিশ্চয়তা দেয় ডাক বিভাগ।

জানা গেছে, এই অনুচ্ছেদেই প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি যোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সংশোধনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে ইসি। সেখান থেকে কোনো আপত্তি না আসলে পাকাপোক্ত হচ্ছে সুযোগটি।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রক্রিয়াটি চলার মধ্যেই আরেকটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ইসি। আর সেটি হলো ই-ব্যালট পেপারে ভোট বা অনলাইনে ভোটদান প্রক্রিয়া। তবে এজন্য আগে দলগুলোর মতামত নিতে চায় ইসি।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, পোস্টাল ব্যালটের বিষয়টি ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা কোনো কিছু আমাদের অবগত করেনি। নিশ্চয় আলোচনা হচ্ছে।

কমিশন মনে করছে, এটি অনলাইনে করা যায় কি-না, কিংবা যেটা ট্রেডিশনালি করে থাকি- এখান থেকে দু’একটা পর্যায়ে অনলাইনে চলে যাওয়া যায় কি-না, যাতে কম সময়ে ভোট কাস্ট করা যায়। এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এজন্য আইনের কারেকশন লাগবে। স্টেকহোল্ডারদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) মতামত লাগবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ই-ভোট বা অনলাইনে ভোটদান পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বা আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। এক্ষেত্রে দলগুলোকে চিঠি দিয়ে মতামত চাওয়া হতে পারে। কিংবা অনলাইনেও মতামত চাওয়া হতে পারে।

দেশে কাগজে ছাপানো ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ভোট ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয় ২০১০ সালে। সে সময় নারয়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। যেখানে অনলাইনের কোনো বিষয় না থাকলেও রয়েছে ইলেকট্রনিক ভোট। ওই নির্বাচনে সফল হওয়ায় পরবর্তীকালে সব নির্বাচনেই ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে স্থানীয় নির্বাচনে মোটা দাগে এবং জাতীয় নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করছে ইসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *