ঢাকা, রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন
সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় ঠাঁই হলো মাদক নিরাময় কেন্দ্রে
ডেস্ক রিপোর্ট ::

পায়ে ছেঁড়া স্যান্ডেল, গায়ে ময়লা জামা পরা এই ব্যক্তির নাম আবুল কালাম আজাদ। দেখে হয়তো কেউই বলবে না, কক্সবাজারের চকরিয়ায় ৬২ কানি জমি আর শহরে ৬ কাঠার ওপর সেমিপাকা ঘর রয়েছে তার।

জীবনের ৩৮টি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাটিয়ে ২০১৭ সালে দেশে ফেরার চারমাস পর মারা যান স্ত্রী শামীমা। এর চারদিনের মাথায় সম্পত্তি পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে তাদের ৪ সন্তান। সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় বৃদ্ধ বাবার ওপর নির্যাতন, প্রাণে বাঁচতে ঘর ছাড়েন সন্তানদের নির্মমতার শিকার আবুল কালাম আজাদ।

সন্তানদের পড়িয়েছিলেন ইংলিশ মিডিয়ামে। বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, থাকেন দুবাইতে। ছোট ছেলে লন্ডনে, দুই মেয়েও চাকরিজীবী। পালিয়ে থাকা বাবার সন্ধান পান ৩ বছর পর, এরপর সম্পত্তির জন্য মাদকাসক্ত সাজিয়ে পাঠিয়ে দেন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে।

সন্তানদের নির্যাতনের পর নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সেই বৃদ্ধ পিতা আবুল কালাম আজাদকে ৫২ দিন পর ঢাকার এক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। উদ্ধারের পর গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের একটি আদালতে চার ছেলের নির্যাতনের বর্ণনা দেন আজাদ।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, বাবার ওপর সন্তানদের নির্মমতা সিনেমাকেও হার মানায়। সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় সন্তানদের নির্যাতনে ঘর ছেড়েও রেহাই পাননি আজাদ। বাড়ি থেকে নিখোঁজের পর তাকে খুঁজে বের করে মাদকাসক্ত সাজিয়ে পাঠানো হয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। অবশেষে ৫২ দিন পর সেখান থেকে হতভাগ্য পিতাকে উদ্ধার করে পিবিআই।

পিবিআই কর্মকর্তা ইখতেয়ার উদ্দিন জানান, চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেয়ার আদেশ দেন। নিজ জিম্মায় ছাড়া পেলেও হতভাগ্য এ পিতার গন্তব্য এখনও অনিশ্চিত।

আবুল কালাম আজাদ জানান, মাদকে আসক্তির অভিযোগে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠিয়েছে তার ছেলে-মেয়ে। রাস্তায় দিন কাটানোর এক পর্যায়ে কিছুদিন ছিলেন হোটেল বয় শাহাবুদ্দিনের আশ্রয়ে। এই শাহাবুদ্দিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজাদকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *