ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন
সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বাংলাদেশিসহ আহত ২
ডেস্ক রিপোর্ট ::

মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুথি। এই হামলায় আমিরাতে হতাহতের কোনো ঘটনা না ঘটলেও সৌদিতে এক বাংলাদেশি প্রবাসীসহ দু’জন আহত হয়েছেন।

আমিরাতে হুথিদের প্রথম ড্রোন হামলার সপ্তাহ খানেকের মাথায় ফের এই হামলার ঘটনা ঘটল। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

আরব আমিরাতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার উপসাগরীয় এই দেশটি লক্ষ্য করে দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। তবে ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি লক্ষ্যে আঘাত হানার আগেই আকাশে আটকে দেওয়ার পর ধ্বংস করা হয়েছে। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

দেশটির এই মন্ত্রণালয় বলছে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ রাজধানী আবু ধাবির কাছের বিভিন্ন এলাকায় পড়েছে। এ ধরনের হামলা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট বলছে, সোমবার ভোরের দিকে আকাশেই একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে সামরিক বাহিনী। এ সময় ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় এক এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পরে হালনাগাদ তথ্যে জানানো হয়, ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে দুই বিদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন এবং স্থানীয় একটি শিল্প এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সৌদি গেজেট বলছে, সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ আঘাতে আহত দুই বিদেশির একজন বাংলাদেশের এবং অন্যজন সুদানের নাগরিক।

এর আগে, গত সোমবার হুথিদের সশস্ত্র ড্রোন হামলায় আবু ধাবিতে তিনটি তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুই ভারতীয় এবং এক পাকিস্তানির প্রাণহানি ঘটে। ওই বিস্ফোরণে আরও ৬ জন আহত এবং আবু ধাবি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের একটি নির্মাণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আচমকা এবং এলোপাতাড়ি হামলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বোমা বোঝাই ড্রোন ব্যবহার করে আসছে। সৌদি আরবের বিমানবন্দর, তেল স্থাপনা এবং তেল-গ্যাসের পাইপলাইনে প্রায়ই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় এই বিদ্রোহীগোষ্ঠী।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।

জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *