মিয়ানমারে সংঘাত আবারও বেড়েছে। নাফ নদের ওপারে থেমে থেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হচ্ছে, যা কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে শোনা যাচ্ছে।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠে সীমান্তের এপারও। এরপর থেকে কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ বেলা ১২টা ৫০ মিনিটের দিকেও বিকট ২টি শব্দ পাওয়া যায়।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আসছে এমন বিস্ফোরণের শব্দ। শাহপরীর দ্বীপের একাধিক বাসিন্দারা বিষয়টি জানিয়েছে।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, নাফ নদীর পূর্ব ও দক্ষিণাংশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। যেসব স্থান থেকে গোলাগুলির আওয়াজ আসছে, সেখানে রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নল বন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা অবস্থিত। এসব এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ওই চৌকি ঘিরেই চলছে এই সংঘর্ষ।
তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশের প্রচুর গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়। তবে রাতভর কোনো ধরনের শব্দ শোনা যায়নি। শনিবার সকাল থেকে কিছুক্ষণ পরপর বিকট শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে। সেই সঙ্গে গোলাগুলির শব্দ কানে ভেসে আসে।
বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হঠাৎ টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ ও গোলাগুলি খবর পেয়েছেন। সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।’
শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মিয়ানমার সীমান্ত শান্ত ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। এতে এলাকাবাসী ভীত হয়ে পড়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এটি মিয়ানমারের সমস্যা। মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানোর হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মিয়ানমারের গণমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ তীব্রতর হয়েছে। কারণ আরাকান আর্মি তিনটি উপকূলীয় শহর মংডু, রামরি ও রাথেডাংয়ে জান্তা সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ বাড়িয়েছে। জান্তার সামরিক বাহিনীও বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী একযোগে বোমা হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহীদের লক্ষ করে। ওপারের আকাশে হেলিকপ্টারের চক্কর কক্সবাজারের টেকনাফ থেকেও দেখা গেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ আসে। সেই সঙ্গে কয়েক জায়াগায় ধোঁয়া উড়তেও দেখা যায়।
Leave a Reply