সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, সেনাসহ অন্য কর্মকর্তাদের ফেরত নেওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন মিয়ানমারের কর্নেল মায়ো থুরা নাউং। ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানী জেটিঘাটে।
অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া নিজেদের সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ নাগরিককে ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের ইনানী জেটিঘাটে দুই দেশের শীর্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ-বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার বিষয়ক পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোয়ে ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তার আগে বৃহস্পতিবার ভোরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত ও টেকনাফ থেকে বিজিবির পাহারায় কক্সবাজারের ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয় তাদের।
বিজিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, বিজিবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের সীমানায় এসে গভীর সাগরে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্নেল মায়ো থুরা নাউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিজিপি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিঘাটে আসে। ইনানী জেটিঘাট থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওই জাহাজে নিয়ে গিয়ে হস্তান্তর করা হবে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। যুদ্ধের মধ্যে বিদ্রোহীরা বিজিপির কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করে নিলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। এ সময় তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে রাখা হয় ঘুমধুমের একটি স্কুলে। পরে তাদের মধ্যে ১০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয় টেকনাফে।
এর মধ্যেই তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের তরফে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়।
পালিয়ে আসা ৩৩০ জনের মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও চারজন বেসামরিক নাগরিক।
Leave a Reply