ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন
হোটেল সী পার্লে পুলিশের অভিযান, রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ে পণ্ড
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

কক্সবাজারে এবার ঘটা করে একটি হোটেলে দুই রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রায় হাজারো রোহিঙ্গা অংশ নেয়। তাদের জন্য আয়োজন করা হয় বিশাল মেজবানও।

বিষয়টি জানতে পেরে রবিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি টিম হোটেল—মোটেল জোনের সী পাল—১ ও সী পাল—২ হোটেলে অভিযান চালিয়ে ওই বিয়ে পণ্ড করে দেয়। পুলিশ আসার খবরে অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়। এসময় আটক করা হয় নারী ও শিশুসহ ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে। উদ্ধার করা হয় ১২ টি অস্ট্রেলিয়ান ও ৭ টি আমেরিকান পাসপোর্ট। তবে পরে এসব পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মো. শাকিল হাসান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের খবর পেয়ে সী পাল হোটেলে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে প্রায় ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৩২ জন নারী ও ২৪ জন শিশু।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আটক রোহিঙ্গাদের আরআরআরসি এর মাধ্যমে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তারা কিভাবে কক্সবাজার শহরে আসল এ নিয়ে যাচাই—বাছাই চলছে।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্থানে ১৯ জন বিদেশী নাগরিক ছিলেন। তারমধ্যে ১২ জন অস্ট্রেলিয়ান ও ৭ জন আমেরিকান। তারা সবাই মিয়ানমারের নাগরিক ছিলেন। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার নাগরিকত্ব পান। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়ার পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের বিষয়েও আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া হোটেল সী পাল কতৃর্পক্ষ কেন রোহিঙ্গাদের স্থান দিল এ নিয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ক্যাম্প—১৯ থেকে আসা ফিরোজ আহমদ নামের এক রোহিঙ্গা জানায়, ‘৪ জন নারীসহ মোট ১২ জন রোহিঙ্গা নিয়ে তিনি এখানে মেজবান খেতে এসেছিলেন। চেকপোস্টে কৌশলে নিরাপত্তাকর্মীদের ফাঁকি দেওয়া হয়।’

একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী হাসিনা জানান, ‘পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে তিনি কক্সবাজার শহরে দাওয়াত খেতে এসেছেন। শহরে আসতে তেমন কোন বাঁধার সম্মুখিন হননি।’

মহেশখালী কুতুবজোমের ছৈয়দুল আমিন ও ইমাম হোসেন নামের দুই ব্যক্তি ১৩ জন বাংলাদেশী নিয়ে এখানে বিয়েতে আসেন। তারা জানায়, অষ্ট্রেলিয়ায় তাদের ভাই রয়েছে। তার সাথে এক রোহিঙ্গা প্রবাসীর বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই সুবাধে তারা বিয়েতে আসেন।’

স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে এখানে একটি বিয়ের রান্না চলছিল। দুপুর গড়াতেই এখানে শত শত মানুষ জড়ো হয়। দিনজুড়ে জনমনে কানাঘুষা চলছিল তারা সবাই রোহিঙ্গা। অবশেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেই রহস্য উন্মোচন করে।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ রোহিঙ্গারা যাতে কক্সবাজারে ছড়িয়ে না পড়ে সেটি নিয়ে স্থানীয়রা শংকিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে নানা কৌশলে রোহিঙ্গারা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। ক্যাম্পে বিজিবি ও এপিবিএনের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। এসব চেকপোস্ট ভেদ করে কিভাবে এতগুলো রোহিঙ্গা আসলো এটি চিন্তার বিষয়। এটি কক্সবাজারের জন্য অশনি সংকেত বটে। রোহিঙ্গা প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হউক।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *