ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার ৩ কমান্ডার গ্রেফতার
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

মিয়ানমারের সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) শীর্ষ ৩ কমান্ডারকে আটক করেছে র‌্যাব-১৫। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও অ্যামুনিশন উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) ভোরে কক্সবাজারের উখিয়ার ১৭ নম্বর ও ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব ১৫-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আটকদের মধ্যে মৌলভী হামিদ হোসেন প্রকাশ ডাক্তার হামিদ। তিনি আরসার স্লিপার সেল ও ওলামা বড়ির প্রধান। আবু তৈয়ব প্রকাশ সোনা মিয়া সোনালী আরসার অর্থ সমন্বয়ক। আর ওসমান গনি আরসার ইন্টেলিজেন্স সেলের প্রধান।

লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১৭ নম্বর ক্যাম্প থেকে মৌলভী হামিদ হোসেন প্রকাশ ডাক্তার হামিদ ও আবু তৈয়ব প্রকাশ সোনা মিয়া সোনালীকে আটক করা হয়। আর ৪ নম্বর এক্সটেশন ক্যাম্প থেকে ওসমান গনিকে আটক করা হয়।

তিনি বলেন, মৌলভী হামিদ হোসেন ২০১৭ সালে পরিবারসহ মিয়ানমারের বুচিডং থেকে এসে বালুখালী ক্যাম্পে বসবাস শুরু করেন। মিয়ানমারে থাকাকালীন তিনি আরসার ওলামা কাউন্সিলের কমান্ডার মৌলভী তোহার মাধ্যমে আরসায় যোগ দেন। হামিদ গ্রাম্য ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন এবং তার বাবাও ছিলেন গ্রাম্য ডাক্তার। ফলে স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মধ্যে তার পরিবারের ব্যাপক প্রভাব ছিল। এই সুবাদে তিনি দ্রুত আরসার শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। প্রথমে তিনি ৮ নম্বর ক্যাম্পের প্রধান জিম্মাদার হন পরে ওলামা বডির কার্যকরী সদস্য হন। হামিদ নতুন সদস্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাতেন এবং আরসার বরাদ্ধকৃত টাকা পরিবারের সদস্যদের নিকট প্রেরণ করতেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধান অর্থ সমন্বয়ক আবু তৈয়ব ২০১৬ সালে আরসায় যোগদান করেন এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে কুতুপালং ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করে আসছিলেন। গত ২ অক্টোবর আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও আরসা প্রধান আতাউল্লাহর একান্ত সহকারী এবং অর্থ সমন্বয়ক মোহাম্মদ এরশাদকে র‌্যাব আটক করলে তৈয়বকে অর্থ সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর ওসমান গনি আরসার একজন সক্রিয় সদস্য। তথ্য-প্রযুক্তি এবং ইংরেজী ভাষায় তার বেশ দক্ষতা থাকায় আরসার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়গুলো দেখভাল করতেন। এই সুযোগে তিনি ক্যাম্পে পরিচালিত এনজিও ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য আরসার শীর্ষ নেতাদের সরবরাহ করতেন। পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতির খবরাখবর পৌঁছাতেন। তাছাড়া বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ্য রাখতেন।

আটক ৩ জনকে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে জানিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, র‌্যাব এ পর্যন্ত আরসার মোট ৭৩ জন সক্রিয় সদস্য ও শীর্ষ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *