কক্সবাজারের টেকনাফের বার্মিজ মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার রাত ২টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওপরের বাজার নামের বার্মিজ মার্কেটে এ আগুন লাগে। এতে কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিক ও মুদি দোকানসহ নানা ধরনের এক শর বেশি দোকান পুড়ে গেছে। মালামালের পাশাপাশি পুড়ে গেছে নগদ টাকা ও অন্যান্য সরঞ্জামও। এ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতির হয়েছে বলে দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টেকনাফ স্টেশন কর্মকর্তা মুকুল কুমার নাথ বলেন, ‘টেকনাফ পৌরসভার ওপরের বাজার নামক বার্মিজ মার্কেটে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ করে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
পুড়ে যাওয়া বার্মিজ মার্কেটটির পাহারাদার মোহাম্মদ কাইয়ুম বলেন, রাত দেড়টার দিকে মার্কেটে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত চারদিক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিজিবি, উপজেলা প্রশাসনের সদস্যসহ স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিক, মুদি দোকানসহ এক শর বেশি দোকান পুড়ে গেছে।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘পৌরসভার বার্মিজ মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। স্থানীয় লোকজনসহ টেকনাফ ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি উখিয়া ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ, বিজিবির সদস্যরা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণসহ দোকানে আটক পড়া লোকজনদের উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে-এ ঘটনায় প্রায় শতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। ভস্মীভূত হয়ে গেছে সিংহভাগ মালামাল। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, সবাই মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার পাশাপাশি দোকানের ভেতর রাত্রিযাপন করা ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের বের করার চেষ্টা করেছি। তাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সকালেও মার্কেট এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। তা নেভানোর কাজ চলেছে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, গত এক যুগে কক্সবাজারে একসঙ্গে এতগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছি না। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণে চেম্বার চেষ্টা চালাচ্ছে।
Leave a Reply