ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন
পথে পথে বাধা সত্ত্বেও লোকে লোকারণ্য বিএনপির সমাবেশ
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

চট্টগ্রামের মীরসরাই, সাতকানিয়া, বাঁশখালীসহ নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বাধা, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও যানবাহন ভাঙচুর সত্ত্বেও চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ হয়ে উঠেছিল লোকে-লোকারণ্য। নগরীর অন্যতম বৃহৎ উন্মুক্ত ময়দান রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

সমাগম ঘটে লক্ষাধিক মানুষের। মাঠের বাইরে রাস্তায়ও অবস্থান নেন চট্টগ্রাম , তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকজন।

বুধবার দুপুর ২টায় শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ব্যানার ফেস্টুন হাতে ট্রাক ও বাসযোগে আসা নেতাকর্মীরা সিআরবি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে থাকেন। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে একের পর এক মিছিল আসতে থাকে সমাবেশে।

বিকাল নাগাদ মাঠ প্রায় ভরে যায়। তবে কাদার কারণে মাঠের পেছনের  দিকের ও একপাশের কিছু অংশ ফাঁকা ছিল। সেখানে দাঁড়াতে না পেরে অনেককেই সংলগ্ন সড়ক ও সিআরবি এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা যায়।

এই  মাঠে ২০১১ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছিল। এক দশক পর সেই একই মাঠে বিএনপি আরেকটি বড় আকারের সমাবেশ করতে সক্ষম হলো।

সমাবেশে আসার পথে বিভিন্নস্থানে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা সমাবেশে তাদের বক্তব্যে অভিযোগ করেছেন। বিকাল ৩টার দিকে নগরীর আমবাগান থেকে রেলওয়ে স্কুল পর্যন্ত  প্রায় আধ কিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সমাবেশমুখী বাসে হামলা চালানো হয়। এ সময় লোহার রড  হাতে একদল যুবক ৮-১০ টি বাস থামিয়ে ভাঙচুর করে। মারধোর করে বাসে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের। এতে কয়েকজন আহত হন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।

হামলার শিকার বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রাণ বাঁচাতে বাস থেকে নেমে বিভিন্ন দিকে চলে যান। এ সময় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সড়কটি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভীতি ছড়াতে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলেও বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।

এদিকে সকালে মীরসরাইর বারইয়ারহাটসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপির সমাবেশগামী বেশ কয়েকটি বাস থেকে নেতাকর্মীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।এ সময় বারইয়ারহাটে হামলায় বিএনপির প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী, সাতকানিয়া ও নগরীর আগ্রাবাদ, নতুন ব্রিজ এলাকায় ছাত্রলীগ যুবলীগ কর্মীরা লোকজনকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সমাবেশগামী লোকজনকে বাধা দেওয়া হয়েছে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিসহ আরও কয়েকটি এলাকায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সমাবেশে তার বক্তব্যে বলেন, সমাবেশ বানচাল করতে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে হানা দিয়েছে। তারা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বিনা অপরাধে ধরে নিয়ে গেছে।

পথে পথে বাধার অভিযোগ এনেছেন সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অনেক জায়গায় গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। লোকজনকে নামিয়ে দিয়েছে। গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু উত্তাল তরঙ্গ ঠেকাতে পারেনি। চট্টগ্রামের মানুষকে বাধা দিয়ে ঠেকানো যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *