নোয়াখালী শহরের নিজ বাসায় তাসনিয়া হোসেন অদিতাকে (১৪) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি (৩০)।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
রাত ৮টার দিকে নিজ সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীর বাসায় প্রবেশ করেন গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি। তারপর একপর্যায়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন রনি। ধস্তাধস্তির সময় নিজেকে রক্ষা করার জন্য রনির ঘাড়ে ও গলায় আচড় দেয় অদিতা। বিভিন্ন কারণে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয় রনি। রাগান্বিত হয়ে অদিতা বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে ছোরা এনে অদিতার বাম হাতের রগ এবং গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে হাতের বাঁধন খুলে দেয়।
মো. শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, জবানবন্দিতে রনি বলেছে সে এসব শিখেছে ইন্ডিয়ান টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে। রনি ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে ঘরের আলমিরা ও ওয়ারড্রবের সকল কাপড় চোপড় ও কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভেতরের রুমের দরজা লক করে এবং ঘরের মূল দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতী খীসা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজিব, ডিআইও-১ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) নামে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অদিতা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর ইউনিয়নের আবুল খায়ের পেশকার বাড়ির মৃত রিয়াজ হোসেনের মেয়ে। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা। এ ঘটনায় গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ (২৫) ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তবে গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনিকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
Leave a Reply