আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের কতদিন ভরণপোষণ দিতে পারব- এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মিয়ানমার এত বড় অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।
রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার বৈশ্বিক ভাবমূর্তি : প্রসঙ্গ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
‘বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম’ আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন। মিয়ানমার প্রাকৃতিক সমৃদ্ধশালী দেশ হলেও জান্তা সরকারের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তারা বারবার আলোচিত হয়েছে। তারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বছরের পর বছর ধরে অত্যাচার করছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশের কোনো অংশ দখল করার ইচ্ছা আমাদের নেই। মিয়ানমার বারবার আমাদের উস্কানি দিচ্ছে। তারা আমাদের দেশের ওপর গোলা ছুড়ছে। কিন্তু আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। পরাশক্তিশালী দেশগুলোর কথা ও কাজের মিল পাওয়া যায় না। তারা মুখে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চাইলেও মন থেকে প্রত্যাবাসন চায় না। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারকারীদের দ্রুতবিচার দাবি জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্রদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে রোহিঙ্গা সমস্যা অন্যতম। এ ধরনের সমস্যাগুলো বিশ্বের মানুষের কাছে জানানো দরকার। বিশ্বের ইয়াবা পাচারকারী দেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের শেখার কিছু নাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া আন্তর্জাতিক সমস্যা। যারা বাংলাদেশে আটকা পড়ে গেছে আমরা চাই তারা নিজ দেশে ফিরে যাক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শাহ আজম বলেন, বর্তমানে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নানান অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে একটা সংকট তৈরি হচ্ছে এবং আমাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এটা আসলে আন্তর্জাতিক সমস্যা তাই এটাকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। মিয়ানমার দেশে যে বৈষম্যমূলক আইন আছে, সেই আইন বিলুপ্ত করার জন্য জনমত সৃষ্টি করে বিলুপ্ত করতে হবে। এজন্য বাইরের দেশ থেকে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
সেমিনারে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি. জে. (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন নর্থ-সাউথর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী।
Leave a Reply