ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন
২৫০টি সিসি ক্যামেরার নজরে থাকবে কক্সবাজার
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

আড়াই শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আসছে পর্যটন শহর কক্সবাজার। দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ পুরো শহরকে সার্বিক নিরাপত্তার চাদরে আনতে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এসব ক্যামেরার ১০৬টি বসাচ্ছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক), আর কক্সবাজার পৌরসভা বসাচ্ছে ৭৫টি। এর আগে নানা সময়ে পুলিশ বসিয়েছে ৫৪টি সিসি ক্যামেরা। এছাড়া কক্সবাজার জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশ সপ্তাহখানেক আগে ১৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে।

জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও কক্সবাজার পৌরসভা মনে করছে, ক্যামেরাগুলো লাগানোর কাজ শেষ হলেও পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়বে এবং চুরি–ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।

সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৭৮টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশের অধীনে আগে থেকেই ৫৪টি পয়েন্টে দীর্ঘ দিন ধরে ৫৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। যার মধ্যে প্রাকৃতিক এবং যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বন্ধ আছে ১৯টি। অপর ৩৫টি ক্যামেরা সচল রয়েছে। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আলাদা কক্ষ রয়েছে। যেখানে আপাতত তিনজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি সার্বক্ষণিকভাবে ক্যামেরাগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও কক্সবাজার পৌরসভার অধীনে কিছু ক্যামেরা বসানো শেষ হয়েছে। আরও কিছু ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।

তিনি জানান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাদের অধীনে ১০৬টি পয়েন্টে ১০৬টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এক মাসের মধ্যে সব ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানানো হয়েছে। কক্সবাজার পৌরসভার পক্ষে বসানোর হচ্ছে ৭৫টি ক্যামেরা। যার মধ্যে ২৫টি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর ছাড়াও পর্যটন স্পটে ক্যামেরা বসিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

মাহফুজুল ইসলাম জানান, সব ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ অধিকার জেলা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ক্যামেরাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। এতে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজতর হবে পুলিশের জন্য।

কউকের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানিয়েছেন, যে সব সড়ক তাদের অধীনের রয়েছে, সেখানেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে। ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ অধিকার পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, পৌরসভার ২৫টি পয়েন্টে এরই মধ্যে ২৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এক মাসের মধ্যে আরও ৫০ টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে।

এদিকে, কক্সবাজারের পর্যটন স্পটে ১৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোন। পর্যাক্রমে সব স্পটেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানিয়েছেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক।

তিনি বলেছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে দেশি-বিদেশি পর্যটকের জন্য শতভাগ নিরাপদ একটি অঞ্চল। যার জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি শুরু করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও বসানো হবে এই ক্যামেরা।

এর আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সমুদ্র সৈকতের ৫টি প্রবেশ পথে আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যা পর্যটকসহ সবার নিরাপত্তায় ভূমিকা রেখে চলেছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম আশা করছেন, ক্যামেরা বসানোর পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, অপরাধীদের শনাক্ত ও আটক সহজ হয়ে উঠবে। কক্সবাজার হবে শতভাগ নিরাপদ একটি পর্যটন শহর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *