ঢাকা, রবিবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
হেনস্তা-হুমকির পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও পাউবো প্রকৌশলীর
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহি প্রকৌশলী ও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি একে অপরকে হুমকি ও হেনস্তার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন। ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের দাবি তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে পিয়ন দিয়ে হেনস্তা করেছেন পাউবো নির্বাহি প্রকৌশলী।
অপরদিকে, নির্বাহি প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদের দাবি, যথাযথ সম্মান না করার অভিযোগ তুলে পিয়নকে গালিগালাজ, হেনস্তা ও তাকে (নির্বাহি প্রকৌশলীকে) হুমকি দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। সোমবার (২৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টা হতে ১০টা পর্যন্ত সময়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্বাহি প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, পাউবোর অফিস সহকারিকে প্রহার ও হুমকির বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ছাড়াও জেলা প্রশাসক এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান ও কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফাকে অবগত করেছি।
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, সোমবার রাতে ফোন দিয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আমার সাথে দেখা করতে চান। আমি ওনাকে আসতে বলি। ওনি যখন আসেন তখন আমি সরকারি একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে অনলাইনে যুক্ত ছিলাম। একারণে ওনাকে ২০মিনিট মতো অপেক্ষা করতে হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত  হয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আমার অফিসের স্টাফদের গালিগালাজ ও কায়সার নামে এক অফিস সহকারীকে পিঠিয়েছেন। পরে মুঠোফোনে আমাকেও গালিগালাজ ও হুমকি দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ।
অপরদিকে, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসাইন অভিযোগ করে বলেন, আমার এলাকার একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে পূর্বে আমার কথা হয়। তিনি আমাকে সোমবার রাতে ডেকে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে অফিসে গেলে নির্বাহি প্রকৌশলী মিটিংয়ের কথা বলে আমাকে বাইরে অফিস সহকারির রুমে বসিয়ে রাখেন। ঘন্টা-দেড়েক বসে থাকার পরও ডাক না পাওয়ায় আমি চলে আসছিলাম। পিয়ন গিয়ে খবরটি দেয়ার পর নির্বাহি প্রকৌশলী আমাকে আবারো ডেকে নিয়ে একই জায়গায় বসান। তখন রাত প্রায় সোয়া ১০টা। মিনিট দশেক পর পিয়ন রুমের ফ্যান-এসি সব বন্ধ করে চলে যান। আমি অপমানিত বোধ করে দোতলা থেকে নিচ তলায় নামার সময় সেই পিয়নকে সামনে পেয়ে বলি, নির্বাহি প্রকৌশলী আমাকে ডেকে এভাবে হেনস্তা না করলেও পারতেন। কথাটি তিনি গিয়ে নির্বাহি প্রকৌশলীকে জানালে তিনি উঠে এসে আমাকে হাত ধরে টেনে আবার উপরে নিতে চান। আমি না গিয়ে বাড়ি ফিরে আসি।
সাদ্দাম আরো জানান, আমি চলে আসার পর রাতে নির্বাহি প্রকৌশলী আমাকে কল করে বলেন- আপনাকে যতেষ্ট সম্মান করার পরও আপনি চলে গেলেন। তখন আমি পিয়ন অফিসে বসিয়ে ফ্যান-এসি ব›ধ করে হেনস্তার বিষয়টি তুলে ধরি। এসবসহ আরো নানা বিষয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এনিয়ে নির্বাহি প্রকৌশলী আমার বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ তোলা দুঃখজনক। আমি কাউকে মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেবো এতটা অবুঝ অন্তত নয়। আমার অবস্থানকালীন সময়টা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে প্রমাণ মিলবে।
ঘটনার সময় ছাত্রলীগ সভাপতি সাথে থাকা একাধিক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর দাবি, যখন নির্বাহি প্রকৌশলী জেলা সভাপতিকে হাত ধরে উপরে নিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তখন পাউবো অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ নিয়ে নানা বাজে মন্তব্য করেন।
পাউবো নির্বাহি প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগ সভপতির দাবি সঠিক নয়। ওনাকে ২০ মিনিটের মতো বসানো হয়েছিল। আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ নিয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে খেঁজ নিয়ে জানা যায়, বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত রেস্তোরায় ডেকেছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *