কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালি ইউনিয়নে ইউপি পরিষদ নির্বাচনে দুবছর আগে ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার নির্বাচিত হন জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুল। জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি এলাকায় করতে থাকেন রমরমা মাদক কারবার। তার নেতৃত্বেই টেকনাফে গড়ে ওঠে শীর্ষ মাদক সিন্ডিকেট। মাসে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০-৪৫ লাখ পিস ইয়াবা নিয়ে আসত এই সিন্ডিকেট। যা ছড়িয়ে দেওয়া হতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। শুধু মাদক কারবারিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাবুল অস্ত্র, স্বর্ণ ও চাঁদাবাজিতেও জড়িয়ে পড়েন।
অক্টোবর) ভোরে টেকনাফের কাটাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাফরুল ইসলাম ওরফে বাবুল মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫)। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৫ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসা বাবুল মেম্বার গত ১৮ বছরে কক্সবাজারকেন্দ্রিক কায়েম করে এক ত্রাসের রাজত্ব। তার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। বাবুল রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নবী হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করে চিংড়ি ব্যবসার আড়ালে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছিল।
র্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন,’বাবুল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার একজন অন্যতম শীর্ষ মাদক কারবারি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী। বাবুল মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এলাকায় ২০-২৫ জনের একটি চক্র গড়ে তোলে। চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে পরিচিত তিনি। মাদক কারবারের পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, জোরপূর্বকভাবে বালু উত্তোলন, চোরাই পথে গবাদিপশু পাচার ও পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।’
কমান্ডার মঈন বলেন,’বাবুল ২০০১ সালে চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ভর্তি হয়ে এক বছর পড়াশোনা করে। পরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ২০০৩ সালে স্থানীয় কলেজ থেকে বিএ পাশ করে। ২০০৫ সালে পালংখালি এলাকায় জাবু নামের এক ব্যক্তির খুনের দায়ে হওয়া মামলার আসামি হয়। এরপর থেকেই অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে। অবৈধ অর্থ দিয়ে কক্সবাজারে বিলাশবহুল ফ্ল্যাট, ট্রাক, এলাকাতে জমি ও মাছের ঘেরসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
Leave a Reply