ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ অপরাহ্ন
মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্য
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল ও স্থলপথ দিয়ে মাদকদ্রব্য ইয়াবা বড়ি ও ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচার হয়ে আসার ঘটনা নিত্যদিনের। এখন এ পথ ধরেই মিয়ানমারে যাচ্ছে জ্বালানি ও ভোজ্যতেল। পাশাপাশি চাল, পেঁয়াজ, রসুনসহ ভোগ্যপণ্য দেদার পাচার হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাতের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের তীব্র সংকট চলছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই মাস ধরে চোরাকারবারিরা কক্সবাজার উপকূলের অন্তত ২৫টি পথে জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্য পাচারে সক্রিয় হয়।

কয়েক দিন ধরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অভিযান চালিয়ে অন্তত ১০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল এবং বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য জব্দ করেছে। কক্সবাজার সদর, টেকনাফ ও উখিয়ায় এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৩১ জনকে আটক করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে।

রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে রাজধানী ইয়াঙ্গুনের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ কারণে নিত্যপণ্য ও জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। বিপুল অর্থ দিয়েও পশ্চিম আরাকানের আকিয়াব, ভুচিদং, রাশিদং ও মংডুতে নিত্যপণ্য মিলছে না, যা-ও পাওয়া যাচ্ছে, তার চড়া মূল্য।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি লিটার অকটেন ১৩৫ ও ডিজেল ১১১ এবং সয়াবিন প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সীমান্ত পার করতে পারলেই এসব তেল সোনার দামে বিক্রি করা যাচ্ছে। ফলে চোরাকারবারিরা মরিয়া হয়ে উঠেছে।

সমুদ্র উপকূলের কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক, নুনিয়ারছড়া, মাঝেরঘাট, খুরুশকুল, চৌফদণ্ডী, কলাতলী, দরিয়ানগর, হিমছড়ি; উখিয়ার ইনানী, সোনারপাড়া; টেকনাফের শ্যামলাপুর, লম্বরী, মহেশখালীয়াপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ; মহেশখালীর সোনাদিয়া এবং কুতুবদিয়ার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২৫টি পথ ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা।

এদিকে গত বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবেশী দেশে চোরাই পথে জ্বালানি, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্য পাচার রোধে জরুরি সভা হয়। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে সভায় যেকোনো মূল্যে পাচার প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন সাগরপথে জ্বালানি তেল পাচার রোধে মাঠে নেমেছে। র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের আইন ও গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালাম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্য পাচারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *