সিলেটের ওসমানীনগরের এক নারী চিকিৎসকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করার মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে (সাময়িক বরখাস্ত) জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মানিকুল ইসলাম। তিনি নিজের আসল পরিচয় গোপন রেখে সাবেক মন্ত্রীর ভাইয়ের পরিচয়ে সিলেটের ওসমানীনগরের নারী চিকিৎসক শাহানারা ইয়াসমীনকে বিয়ে করেন। বিয়ে করতে সাজিয়েছেন নকল বাবা-মা। জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আপনের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করেছেন শিক্ষা সনদও। সাবেক মন্ত্রী ছাড়াও আরেক ভাই বিট্রিশ কাউন্সিলের উচ্চপদে কর্মরত এবং রাজধানীতে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। এরকম নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে, নকল বাবা-মা সাজিয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান চিকিৎসক ওই নারীর বাড়িতে।

প্রথমে ওই চিকিৎসকের পরিবার রাজি না হলেও এক সময় রাজি হয়। পরে তাদের বিয়ে হয়। প্রতারণা করে বিয়ের কিছুদিন পর ওই পুলিশ কর্মকর্তার আসল চেহারা প্রকাশ পায়। একাধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। সব জানাজানি হলে ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চিকিৎসক স্ত্রীকে নির্যাতন করেন তিনি। এরপরই আইনের আশ্রয় নেন ভুক্তভোগী নারী।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। সিলেটে কর্মরত থাকাবস্থায় মানিকুল ইসলাম উপ-পরিদর্শক (এসআই) ছিলেন। তখনই বিয়ে করেন ওই নারীকে। পরে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন পরিদর্শক। দায়িত্ব পালন করেছেন একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে। তবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় আদালতে ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন তার স্ত্রী। গতকাল সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন মানিকুল। এসময় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভুঁইয়া।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রাহুল আনাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, মানিকুল ইসলাম সিলেটে উপ-পরিদর্শক (এসআই) থাকার সময় প্রতারণা করে বিয়ে করেন ওসমানীনগরের চিকিৎসক শাহানারা ইয়াসমীনকে। আগের বিয়ে গোপন রেখে বিয়ে করার পাশাপাশি আট বছরের সাংসারিক জীবনে মানিকুল হাতিয়ে নিয়েছেন ২০ লাখ টাকা।