ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন
বিজিএস ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের তামাশা: খাবার মিলেনি দুই হাজার নারী-শিশুর!
আবদুল্লাহ আল আজিজ ::

উখিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র -অসহায় উপকার ভোগীদের নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন মেলার নামে এনজিও সংস্থা বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস) ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের তামাশায় সারাদিন উপোস থেকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় দুই হাজার নারী-শিশু। তাদের কপালে জুটেনি এক প্যাকেট নাস্তা ও খাবারের পানি পর্যন্ত। দুই স্বনামধন্য এনজিও কি অমানবিক আচরণ করল নারী-শিশুদের।

বৃহস্পতিবার(৮ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত গ্র্যাজুয়েশন মেলায় এ ঘটনা ঘটে। এতে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে উপকারভোগীদের মধ্যে। চারিদিকে চলছে সমালোচনার ঝড়।

জানা যায়,উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জিপপ প্রজেক্টের বাংলা জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস) ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের যৌথ আয়োজনে গ্র্যাজুয়েশন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ উঠে, সকাল থেকে বসিয়ে রেখে নাস্তা ও দুপুরের খাবার না দেওয়ার। কিন্তু মেলায় নাচ-গান নিয়ে বিনোদনের কমতি ছিলোনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপকারভোগী নারী জানায়, বাংলা জার্মান সম্প্রীতি ( বিজিএস) ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের এ-তো টাকা খরচ করে এতো বড় আয়োজনে সারাদিন উপোস থাকতে হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এক বোতল পানিও পায়নি। প্রোগ্রামে এসে বৃষ্টিতেও ভিজেছি। সারাদিন বসিয়ে রেখে আলোচনা সভা ও নাচ গান করে আমাদের কোনো খাবারের ব্যবস্থা করেনি আয়োজনকারীরা। এমনকি যাওয়ার সময় বৃষ্টিতে গাড়িও ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। অথচ প্রোগ্রামে আসার আগ পর্যন্ত কত তদারকি। কিন্তু প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর থেকে কেউ খবরও রাখেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশাল প্যান্ডেল এবং মঞ্চ সাজিয়ে বড় প্রোগ্রাম করলে কাউকে নাস্তা বা খাবার দেওয়া হয়নি। আগত অতিথি এবং ডোনারদের উপকারভোগীদের দেখানো হয়েছে প্রজেক্টের সাফল্য।

অতিথি চলে যাওয়ার পরে নাচ আর গানে ভরা ছিলো প্রোগ্রাম। নামমাত্র স্টল সাজানো হয়েছিলো। বলতে গেলে নতুন বাজেট বা প্রজেক্ট নেওয়ার জন্য এ যেনো ছিলো তাদের শুভংকরের ফাঁকি।
তাদের কর্মকর্তাদের জন্য ঠিকই খাবারের ব্যবস্থা ছিল বিজিএস ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের সকল কর্মকর্তা ষ্টাফ কর্মীদের নুর হোটেলের তিনতলায় নিয়ে ভালোমতো খাওয়ানো হয়।অথচ যাদের নিয়ে মূল আয়োজন তারা ছিলো অভুক্ত।

প্রোগ্রামে আগত এক সমাজকর্মী বলেন, উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলা মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন নারী-শিশুদের এনে ডোনার ও সরকারি কর্মকর্তাদের দেখিয়ে মন জয় করে অত:পর নাচ-গানের আয়োজন।

কিন্তু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভুক্ত রেখে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে তাদেরকে বিদায়, করল। যাওয়ার বেলায় কয়েকজন গাড়ি পেলেও বেশীরভাগ নারীরা বাড়ী ফিরেন কষ্ঠ করেই,। ছিলো না তাদের কোনো তদারকি। এ কেমন এনজিওদের তেলেসমাতি।

অথচ আয়োজক পক্ষ হোটেলে গিয়ে ভালো ভালো খেয়ে এসেছেন, দিব্যি মজা করেছেন। ডোনার পার্ট খুশি, আসবে নতুন প্রজেক্ট, দিব্যি চলবে ব্যবসা। উপস্থিত সুধীজন ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের প্রশ্ন গ্র্যাজুয়েশনের নামে উক্ত দুই এনজিওর আসল চেহারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *