ঢাকা, রবিবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন
বিএনপির হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করছে। তাদের হাতে হারিকেনই ধরায় দিতে হবে। তাদের সবার হাতে হারিকেন ধরায় দেন। আর দেশের মানুষকে আমরা নিরাপত্তা দেব। মানুষ যেন ভালো থাকে সেই কাজটাই আমরা করব।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি’-তে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

আমেরিকা, ইউরোপের প্রতিটি দেশ, প্রতিবেশী ভারতসহ সব দেশই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নজর দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খায়। আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি এই কারণে, ভবিষ্যতে আমরা যেন কোনো রকম বিপদে না পড়ি। সেটা মাথায় রেখে সাশ্রয়ী হচ্ছি। সেটা হওয়ার মানে এই না যে এখান থেকে লুটপাট করে খেয়েছি।’

বিএনপির আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে লুটপাট হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা সেই লুটপাট বন্ধ করে উন্নতি করেছি। মাত্র তিন হাজার, সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। লুটপাট করলে সেটা করা সম্ভব হতো না। লুটপাট করলে কমে যায়। চার হাজার ৩০০ মেগাওয়াট থেকে যারা ৩০০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে, তারাই লুটপাট করে। আর যারা বাড়াতে পারে, তারা লুটপাট করে না, বরং প্রতিটি পাই কাজে লাগিয়ে এই উৎপাদনটা বৃদ্ধি হয়।’

প্রকৃত গণতন্ত্র থাকলে কোন দেশের যে উন্নতি হয় বাংলাদেশ তার দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করে সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘যে দল জনগণের মাধ্যমে গড়ে উঠে। যে দলের নেতা কর্মীরা একটা জাতির জন্য আত্মত্যাগ করতে পারে। জেল-জুলুম সহ্য করতে পারে। সেই দল ক্ষমতায় আসলে যে নীতি, আদর্শ থাকে সেটা নিয়ে চললে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হতে পারে। আওয়ামী লীগ সেটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করেছে ও প্রমাণ করেছে।’

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল দেশের ইতিহাসে স্বর্ণ যুগ বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের নির্বাচনে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেইনি, তাই ক্ষমতায় আসতে পারিনি। এটা হলো বাস্তবতা।’

২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে খাদ্য কিনে কমিশন খেয়েছে এবং অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এটাতো বিএনপির এক নেতার বক্তব্যই আছে। আর গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে এসব কাজ করানো হতো। দশ ট্রাক অস্ত্রের একটা চালান ধরা পড়েছে। এ রকম কত চালান এই দেশে এসেছে আর গেছে।’ সেই সময় দলটি দেশকে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছিল বলে জানান তিনি।

২০০১ সালের মানুষ ভোট দিতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল সিল মারা বলে। এরাতো প্রকাশ্যে সিল মারতো। এরা রাতে ভোট নয়, এক একটা বাসে করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা যাবে, এক একটা বুথে ঢুকব, সিল মারবে, ব্যালট বক্স ভরবে এবং চলে আসবে। আর সেটা না পারলে সোজা ঘোষণা।’

মাগুরা নির্বাচন, ঢাকা-১০ আসনের বিএনপি আমলের উপনির্বাচনের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোন মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দেওয়ার অধিকারটা তাদের ছিলো না বিএনপির আমলে। দুর্ভাগ্য হলো, সামরিক শাসকদের হাত ধরে ক্ষমতায় থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করে যে দল গঠন করা হয়েছিল, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে। তাদের কাছ থেকে এখন নানা রকম নীতির কথা শুনতে হয়।’

জনশুমারি কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির ওপরে। সেটাও কারও কারও হিসাবে পছন্দ হচ্ছে না।’ তাদের এ হিসাব পছন্দ কেন নয় জানতে চান সরকার প্রধান। বলেন, নিজেরাই সন্তান পয়দা দিতে থাকুক। জনসংখ্যা বাড়াতে থাকুক। তারা সেটা করুক। আমরা খাবার দেব। কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা চাই প্রত্যেকটা পরিবার যেন সুখী হয় এবং সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে।’

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *