গুড়ার শেরপুরে বিএনপির এক নেতাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। স্থানীয় বিএনপির নেতারা বলছেন, চলমান আন্দোলন নস্যাৎ করতে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে তাকে খুন করা হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের মান্দাইল গ্রামে হত্যার শিকার হন আব্দুল মতিন। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির অদূরে ফসলের মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি বিশালপুর ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
নিহত বিএনপি নেতার ভাগনি জামাই মোস্তাফিজার রহমান জানান, তার মামা শ্বশুর গরু কেনাবেচা করতেন। পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৫ নভেম্বর শেরপুর উপজেলা সদরে অবরোধের সমর্থনে মিছিল করা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে যে মামলা করা হয়, তাতে আসামির তালিকায় আব্দুল মতিনের নাম ৬৪ নম্বরে ছিল। ওই মামলার পর থেকে তিনি বাড়িতে থাকতেন না। গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে রাত কাটাতেন।
মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ’আমার মামা শ্বশুর বুধবার রাতে আফসার আলী নামে তার ভায়রার বাড়িতে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ওই বাড়িতে যাওয়ার জন্য তিনি একজন অটোরিকশাচালককে বলেও রেখেছিলেন। এজন্য ওই দিন রাত ৮টার দিকে সেই অটোরিকশাচালকের বাবা বাচ্চুর বাড়িতে তিনি রাতে খাবারও খান। চালকের আসতে দেরি হওয়ায় তিনি হাঁটা শুরু করেন। এরপর সকালে একদল কৃষক মান্দাইল গ্রাম থেকে ২৫০ মিটার দূরে ধান কাটতে গিয়ে জমিতে তার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে ফোনে ঢাকায় অবস্থানরত তার ছোট ভাই মোজাহিদুল ইসলামকে জানানো হয়। আমি গিয়ে দেখি মামা শ্বশুরের ছেলে মিলন ও ভাগনে মিল্টন তাকে (আব্দুল মতিন) সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলছেন। সেখান থেকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ’তার মাথার পেছনে জখম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তার সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না বলেই জানি।’ রাজনৈতিক কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমি বলতে পারছি না।’
তবে শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আব্দুল মতিন তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির নিবেদিত নেতা ছিলেন। পুলিশের করা একটি মামলার পর থেকে তিনি গ্রপ্তার এড়াতে বাড়ির বাইরে রাত কাটাতেন। তার মতো আরও অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে ফসলের মাঠে নয়তো সেচযন্ত্রের ঘরে রাত কাটাচ্ছেন।
Leave a Reply