ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০ পূর্বাহ্ন
‘চোরাই গরু’ জব্দ করায় বাইশফাঁড়ি বিজিবি ক্যাম্পে হামলা, গ্রেপ্তার ৪
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

 

‘চোরাই গরু’ জব্দ করায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বিজিবির একটি ক্যাম্পে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার মামলায় অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি বিজিবি ক্যাম্পে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিজিবির একাধিক সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে ক্যাম্পের দক্ষিণ পাশের সীমান্ত সড়কের পাশের ব্রিজের নিচ দিয়ে বর্মিজ ১১টি চোরাই গরু বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করে কয়েকজন চোরাকারবারি। এ সময় বাধা দেন পার্শ্ববর্তী ৩৪ বিজিবির অধীনস্থ বাইশফাঁড়ি বিওপির সদস্যরা। গরুগুলো জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী চাকমা পাড়ার (বর্তমানে তংচংঙ্গা পাড়া) কিছু চোরাকারবারি গরুগুলো ফেরত চেয়ে ঘণ্টাখানেক পর প্রথমে অর্ধশতাধিক, পরে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ বাইশফাঁড়ি বিজিবি ক্যাম্প ঘিরে ফেলে। এ সময় তারা হইচই শুরু করতে থাকেন। এরই মধ্যে নিজের গরু দাবি করে এক নারী বিজিবি ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় বিজিবি তাদের ক্যাম্পের গেট বন্ধ করে দেয়।

ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার শরীফুল, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ ইউপি মেম্বার মো. আলমসহ অনেকে তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু উত্তেজিত বাসিন্দারা ক্যাম্প লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় বাইশফাঁড়ি বিওপির হাবিলদার চম্বক কুমার পাল (৫৩), নায়েক মুশফিকুর রহমান (৪৯) ও নায়েক মো. হাছানসহ অনেকে আহত হন।

 

পরে বিজিবি আত্মরক্ষার্থে ১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় চার হামলাকারীকে আটক করে তারা। আটককৃতরা হলেন, সুমন তংচংঙ্গা (২৮), চুতিঅং তংচংঙ্গা (৩৬) রৈশমং তংচংঙ্গা (৬০) ও আনতুমং তংচঙ্গা (৪০)। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ বিষয়ে বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়ার রোয়াজা অংপোছা তংচঙ্গা বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে সত্যি। তবে আমাদের গ্রামের দুটি গরু বিজিবি আটক করেছে বলে আমরা তা আনতে যাই।’ এত নারী-পুরুষের উপস্থিতির কথা জানতে চাইলে রোয়াজা বলেন, ‘তারা হয়তো তা দেখতে এসেছিল।’

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ বলেন, ‘বিজিবির কাজ চোরাচালান রোধ করা, আটক করা। তাদের ওপর হামলা ভালো না। তংচংঙ্গারা তখন আমার কথা না শোনায় বিজিবি বাধ্য হয়ে ১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।’

৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে কক্সবাজার থেকে সীমান্তের এ স্পটে ছুটে যাই। চেষ্টা করেও তংচঙ্গাদের থামাতে পারা যায়নি। তবুও আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছি।’

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টানটু সাহা বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে মামলা করেছে। আসামি গ্রেপ্তার আছে চারজন। বাকি সবকিছু তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *