ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজারে নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষত চিহ্ন
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি হয়নি। বুধবার ভোরে হালকা বৃষ্টি হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। এ পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। এদিকে এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সরাসরি যান চলাচল। তবে আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যান চলাচল করছে।

এদিকে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষত চিহ্ন। স্রোতের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, মহাসড়ক, কালভার্ট ভেসে উঠছে। এছাড়া বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, বসতঘর যেন সে ক্ষতের চিহ্ন বহন করছে।

বুধবার সকালে চকরিয়া উপজেলার কয়েকটি সড়কে দেখা মেলে ভাঙনের তীব্রতা। এর মধ্যে কাকড়া-মিনাবাজার সড়কটির ৩ কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি ভাঙন সড়কটিকে চলাচল অনুপযোগী করে দিয়েছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বলেন, ‘চার দিন ধরে কমপক্ষে ৪-৫ ফুট পানিতে বন্দি অবস্থায় ছিলাম। এখন পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে সড়কের ভাঙন, বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘেরের ক্ষতি দেখা যাচ্ছে। ঘরবাড়িতে রান্না করার সুযোগ নেই। বাড়ির ভেতরে পানি বের করার চেষ্টা করছি। খাবার পানিও পাওয়া যাচ্ছে না।’

বন্যাকবলিত কয়েকটি এলাক ঘুরে দেখা যায়, জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশে ভাঙন রয়েছে। মাতামুহুরী নদী নিকটবর্তী গ্রামের বসতঘরগুলো স্রোতের তোড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। চকরিয়া ও পেকুয়ায় বেশ কয়েকটি বেঁড়িবাধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকেছে পানি। চকরিয়ার পৌর শহরের শপিং কমপ্লেক্স, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়া পানি বের করার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

চকরিয়ার লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, ফাঁসিয়াখালী, বদরখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী এবং পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, উজানটিয়া, মগনামা, রাজাখালী, টৈটং, শিলখালী, বারবাকিয়া ইউনিয়নের পরিস্থিতিও একই। এছাড়াও মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া ও রামুতে নানা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে চকরিয়া-বদরখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ছয় কিলোমিটার, ইয়াংগা-মানিকপুর- শান্তিবাজার সড়কের ১১ কিলোমিটার, লক্ষ্যারচর- বেথুয়াবাজার- বাগগুজারা সড়কের ১১ কিলোমিটার, একতাবাজার-বনৌজা শেখ হাসিনা সড়কের আধা কিলোমিটার, বরইতলী- মগনামা সড়কের সাত কিলোমিটার, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের আড়াই কিলোমিটার, তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, তিনটি কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে। এর সঙ্গে ঘর, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, ফসল, বীজতলা সহ অন্যান্য ক্ষতি রয়েছে। যা এখনও নির্ধারণ করতে কাজ চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *