ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
আসামি ছাড়াতে টাকা নিয়ে, সেই টাকাতেই ইয়াবা কিনে মামলা
ডেস্ক রিপোর্ট ::

গাজীপুরের টঙ্গীতে টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে আসামির স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে টঙ্গী পূর্ব থানার এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তিনি ওই টাকার একটি অংশ দিয়ে কেনা ইয়াবা দেখিয়ে ওই আসামির নামে মামলা দেন ওই এএসআই। এ এএসআইয়ের নাম মমিনুল ইসলাম।

অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম টঙ্গী পূর্ব থানার সহকারী উপপরিদর্শক। মাদকসহ আটকের পর অমিত হাসান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি আসামির স্ত্রীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আসামির স্ত্রী ১৬ হাজার ৭০০ টাকা পরিশোধ করলেও আসামিকে না ছেড়ে থানায় এনে মাদক মামলা দেন মমিনুল ইসলাম।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় আরিচপুর বউ বাজার এলাকা থেকে অমিত হাসানকে আটক করা হয়। অমিত টঙ্গীর দক্ষিণ আরিচপুর এলাকার কাজী ভিলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।

অমিতের স্ত্রী বৃষ্টি জানান, অমিতকে আটকের পরপরই টঙ্গী পূর্ব থানার এএসআই মমিনুল ইসলাম মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বউ বাজার রেলগেট এলাকায় তাঁকে দেখা করতে বলেন। পরে ১৩ দিনের সন্তানকে খালি বাসায় রেখে টঙ্গী বাজার এলাকায় একটি জুয়েলারির দোকানে স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে এএসআই মমিনুলকে দেন।

বৃষ্টি বলেন, ‘টাকা বুঝে পাওয়ার পর মমিনুল বলেন, “মধুমিতা রেলগেট এলাকায় গিয়ে তোমার স্বামীকে ছেড়ে দিব। তুমি বাসায় চলে যাও। ” কিন্তু আমার স্বামীকে না ছেড়ে থানায় নিয়ে যান তিনি। পরে পুলিশের মোটরসাইকেলের পেছনে ছুটতে ছুটতে টঙ্গী পূর্ব থানার গেট পর্যন্ত চলে আসি। তখন এএসআই মমিনুল বলেন, “তোমার স্বামীকে ছাড়া যাবে না। তাকে ৫০০ পিচ ইয়াবার মামলায় চালান দেওয়া হবে। ” এ কথা শুনে টাকা ফেরত চাইলে এএসআই মমিনুল আমাকেও শরীরে করে মাদক পাচারের অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে চালান করার হুমকি দেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ৮ হাজার টাকা ফেরত দেন।’

আসামির স্ত্রী বৃষ্টির অভিযোগ, স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য এএসআই মমিনুল ইসলামকে ১৬ হাজার ৭০০ টাকা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁর স্বামীকে ছাড়েননি। টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে ৮ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। বৃষ্টি বলেন, ‘বাকি টাকা দিয়ে মাল (ইয়াবা) কিনে মামলা দিবেন বলে জানান মমিনুল। আটকের সময় অমিতের কাছে ৮ পিস ইয়াবা পাওয়ার কথা জানালেও (আজ) বুধবার দুপুরে ৫২ পিস ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠিয়েছেন।’

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার এএসআই মমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছি। আর আমাদের মাল (ইয়াবা) কিনতে কিছু খরচ আছে। তাই বাকি টাকা রেখে দিছি।’

এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, ‘আমি বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যদি সে এমন কিছু বলে থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *