ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
আরও ৮০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

মিয়ানমার থেকে আরও ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তবে নীতিগতভাবে সরকার নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে প্রায় ৮ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে গেছে। সীমান্তের বিষয়টা যদিও আমার না কিন্তু ঢুকে পড়লে তখন আমাদের (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে) এ নিয়ে কথা বলতে হয়। এটা নিয়ে আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষেদে সিরিয়াস আলোচনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই অনুপ্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা হবে।

 অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত সিল করা হয়েছে কিনা বা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ অ্যাক্টিভ না- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত সিল করা কঠিন। আমরা এটা স্বীকার করি। তবে বিভিন্ন সোর্স এখানে কাজ করে। সব মিলে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। অনেক সোর্স দুর্নীতিতে যুক্ত। আমাদের চেষ্টা করতে হবে আটকানোর।
আমার এটা নিয়ে কাল-পরশু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। বিশ্লেষক হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সফল করতে হলে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ সময় বর্তমানে সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে তৌহিদ হোসেনের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, আমি এখনো তাই মনে করি। তবে বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে আমার একার না। সরকারিভাবে কতোটুকু করা সম্ভব হবে তা নিয়ে ভাবছি। উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন মুক্ত মানুষ ছিলাম তখন যে ভাষায় কথা বলতে পেরেছি, এখন আমি যদি কোনো কথা বলি খেয়াল রাখতে হবে আমি প্রতিনিধিত্ব করি সরকারের। 

অন্যান্য প্রসঙ্গ: গত জুলাই মাসে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার ঘটনায় কারাদণ্ড হওয়া ৫৭ বাংলাদেশির সবাইকে ক্ষমা করার আদেশ দিয়েছেন আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কর্মীদের দেশটির আইন সম্পর্কে সচেতন করে পাঠানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেন আমিরাত প্রেসিডেন্ট। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, যে ৫৭ জন মানুষকে অত্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি জেল দেয়া হয়েছে-তার মধ্যে ৩ জন যাবজ্জীবন, ৫৪ জনের ১০-১১ বছর জেল, তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। তারা এখন মুক্ত মানুষ হিসেবে থাকতে পারবে। এটা আমি মনে করি যে, বিশেষভাবে একটা সম্মান দেখানো হয়েছে ড. ইউনূসের প্রতি। উনি অনুরোধ করেছেন, আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে। তারা তাদের ক্ষমা করেছেন এবং এই মানুষগুলো বা পরিবারগুলো বিরাট বিপদ থেকে মুক্ত হয়েছেন। তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি (আমিরাতের প্রেসিডেন্ট) অবশ্য একটা কথা বলেছেন, আপনারা যাদের পাঠাবেন তাদের আমাদের আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করে, একটু ট্রেইন করে পাঠাবেন। আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আবেগতাড়িত হয়ে তারা এটা করেছেন। তবে মনে রাখতে হবে, তাদের আইনে এটা নাই। আপনি যে দেশে কাজ করতে যাবেন সেদেশের আইন মেনে চলতে হবে। ক্ষমা পাওয়া ৫৭ বাংলাদেশি দেশটিতে কাজ করতে পারবেন কিনাÑজানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি যতটুকু জানি ওখানে কাজ করতে পারবে, দেশে ফেরত পাঠাবে না। এমনকি যদি দেশে ফেরত পাঠানো হতো তবুও এটা একটা বিরাট সাফল্য হিসেবে আমরা মনে করতাম। কারণ, মানুষগুলোর জীবন শেষ হয়ে যেত। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তারা সম্পূর্ণ ক্ষমা পেয়েছে কাজেই তারা ওখানে কাজ করতে পারবেন। তবে এটা এখন নিশ্চিত করতে পারবো না, এটা অনুমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *