ঢাকা, শুক্রবার ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
ভোট না দেওয়ায় সাঁকো ভেঙে দিলেন পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা!
উখিয়া নিউজ ডেস্ক :

বগুড়ার শেরপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে ভোট না দেওয়ায় চার গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চরবেলগাছী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

এতে করে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে এ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু টিউবয়েল প্রতীক এবং নুরুন্নবী মন্ডল হিটলার মোরগ প্রতীকে অংশ নেন। এর মধ্যে আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু পরাজিত হন। এতে করে তার কর্মী-সমর্থকরা ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এমনকি ভোট না দেওয়ায় চরকল্যাণী, চরবেলগাছী, চরবিনোদপুর ও বেলগাছী গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলেন। এতে করে এই এলাকার মানুষের যাতায়াত বিছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং উপজেলা সদরে যেতে তাদের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। ফলে তৈরি হয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বাছেদ, আবু সালেম ও আব্দুস সোবাহান বলেন, ‘বাঙালী নদীর ওপর বেলগাছী নামক স্থানে ব্রিজ রয়েছে। এই ব্রিজে যাওয়ার জন্য চরবেলগাছী নামক স্থানে গ্রামবাসীর চাঁদার টাকায় একটি খালের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। আর এই সাঁকোটি দিয়েই চার গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন।’

তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে বেলগাছী গ্রামের মেম্বার প্রার্থী আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু হেরে গেছেন। তাকে ভোট না দেওয়ার কারণে ওই পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সাঁকোটি ভেঙে দিয়েছেন। যাতে করে আমরা বেলগাছী এলাকায় না যেতে পারি। রাতের আঁধারে এই কাজটি করা হয়েছে। এতে করে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।’ এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী আবু সাঈদ খাঁন রঞ্জু বলেন, ‘এই ধরণের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি ও আমার কোনো কর্মী-সমর্থকরা জড়িত নেই।’ এমনকি ভোট না দেওয়ার কারণে মানুষের যাতায়াতের সাঁকোটি ভেঙে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওই ওয়ার্ডের বিজয়ী হওয়া মেম্বার নুরনবী মন্ডল হিটলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামের ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন। কিন্তু নির্বাচনী জয়-পরাজয়কে কেন্ত্র করে সেটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। যা ভাবতেও অবাক লাগছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি।’

এ ‍বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাননি তিনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *