ঢাকা, রবিবার ২১ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভরাডুবির বিশ্বকাপে শেষটাও লজ্জার
স্পোটস ডেস্ক ::

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৫ ওভারে ৭৩ (নাঈম ১৭, মাহমুদউল্লাহ ১৬, শামীম ১৯, তাসকিন ৬*; স্টার্ক ২১-২, হেইজেলউড ৮-২, ম্যাক্সওয়েল ৬-১, জ্যাম্পা ১৯-৫)।
অস্ট্রেলিয়া: ৬.২ ওভারে ৭৮/২ (ওয়ার্নার ১৮, ফিঞ্চ ৪০, মার্শ ১৬*; তাসকিন ৩৬-১, শরিফুল ৯-১)।
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: অ্যাডাম জ্যাম্পা

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ঢুকতে গিয়েই হোঁচট খেতে হলো! কিছুটা চমকেও গেলাম। এ দেখি বিরান ভূমি। চারপাশে অন্যরকম নীরবতা। একটু পর এখানে একটা বিশ্বকাপ ম্যাচ হবে, মাঠের বাইরের পরিবেশ দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। শারজাহ কিংবা আবুধাবিতে ঢুকতে গিয়েই দেখেছি প্রবাসী দর্শকদের উন্মাদনা। কিন্তু এখানে হাতে গোনা কিছু সমর্থক ছাড়া কারও দেখা মিলছে না।

অবশ্য তেমনটা হবেই বা না কেন? বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে প্রবাসীদের প্রত্যাশার বেলুন যে আগেই চুপসে গেছে! এমন ছন্নছাড়া ক্রিকেট আর যাই হোক কাজ বাদ দিয়ে দেখার কোন মানে হয়?

বাংলাদেশ চেয়েছিল শেষটা অন্তত জয়ে রাঙাতে। কিন্তু সেটি ওই চাওয়া পর্যন্তই, করে দেখাতে পারেনি। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচটাও হেরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করল বাংলাদেশ। মূল পর্বে ৫ ম্যাচ খেলে দল হারল পাঁচটিতেই! বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সেমি-ফাইনালের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া। ৪ ম্যাচে তিন জয় তাদের।

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টস ভাগ্যটাও সঙ্গে ছিল না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে যা করল দল, সেটা ভুলে যেতে পারলেই বরং ভালো। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের সামনে সোজা বাংলায়-লজ্জায় ডুবালেন টাইগাররা। দল মাত্র ৭৩ রানে অলআউট হলো। তারপর ৬ ওভার ২ বলে কেবল ২ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া হেসে-খেলে তুলে নেয় পুরো ২ পয়েন্ট। ৮২ বল হাতে রেখেই পায় জয়।

অথচ বাংলাদেশ কি না দুবাইয়ে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল মিরপুরের স্মৃতি। যেখানে গত আগস্টে অস্ট্রেলিয়া দলকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪-১ এ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে দুবাইয়ের বিমান পথ ৩,৫৪৫.৯৯ কিলোমিটার। এই বড় দূরত্বটা থাকল ক্রিকেট মাঠেও। দুবাইয়ের অনেকটা ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা যেন ব্যাট করতেও ভুলে গেলেন। উইকেটে আসা-যাওয়ার এই খেলাটা নিজেরা ফের দেখলে নিশ্চিত করেই লজ্জায় পাবেন!

আরেকটু হলে তো টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন সংগ্রহের লজ্জায় পড়তে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। সেটা অবশ্য টপকালো। আগের সেই দুঃস্বপ্ন ৭০ রান এসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই। সেটি ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আত্মহুতির গল্পটা প্রায় একইরকম। উইকেটে এসেছেন আর ফেরত গেছেন সাজঘরে। আসলে ঘরে ফেরার তাড়াটাও ছিল হয়তো। শুক্রবার সকালেই ফিরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশে। তার আগে হোটেল রুমে দ্রুত গিয়ে ব্যাগ গোছাবেন বলেই কী খেলা শুরুর তিন ওভার না দল হারাল তিন উইকেট! ব্যর্থতার গল্প সমৃদ্ধ করে সেই লিটন দাস ফিরলেন কোন রান না করেই। সৌম্য সরকার ৫ আর মুশফিকুর রহিম ১ রান করে এটুকু অন্তত বুঝিয়ে দিলেন-২০ ওভারের ক্রিকেটে তার দিনও বুঝি ফুরাল!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *